যেসব দেশকে ‘ডার্টি ১৫’ বললো ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, ২ এপ্রিল হতে চলেছে আমেরিকার মুক্তি দিবস (লিবারেশন ডে)। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে বুধবার ঘোষণা করা হয় ‘পারস্পরিক শুল্ক’ প্রস্তাব।
নয়া নীতিতে একাধিক দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে চলেছে আমেরিকা, যাদের বাণিজ্য নীতি অন্যায্য বলে মনে করেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিজের কথায়, ‘এরা কুখ্যাত পঞ্চদশ (ডার্টি১৫)’।
কোন কোন শুল্কের উপর প্রভাব পড়বে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও দেশের নাম এখনও ঘোষণা করেনি ট্রাম্প সরকার। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নয়া নীতি সুদূরপ্রসারী এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এখন প্রশ্ন, ট্রাম্পের কথামতো এই ‘কুখ্যাত পঞ্চদশ (ডার্টি ১৫)’ কারা? আমেরিকার কোষাগার দফতরের সচিব (ট্রেজারি সেক্রেটারি) স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি দেশকে ‘ডার্টি ১৫’ বলে মনে করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
কারণ, ওই দেশগুলি আমেরিকার বাণিজ্যের ১৫ শতাংশ অংশীদার এবং মার্কিন পণ্যের উপরে উচ্চ হারে শুল্ক এবং অন্যান্য বাণিজ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ করে। মার্কিন কোষাগার সচিবও অবশ্য সেই দেশগুলির নাম করেননি। তবে মার্কিন বাণিজ্য দফতরের তরফে ২০২৪ সালের বাণিজ্যে ঘাটতি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। তাতে বেশ কয়েকটি দেশের নাম করা হয়, যারা মার্কিন পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক চাপায়।
ওই তালিকায় রয়েছে চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো, ভিয়েতনাম, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ভারত, থাইল্যান্ড, ইটালি এবং সুইৎজ়ারল্যান্ড। ওই দেশগুলি সম্মিলিত ভাবে মার্কিন বাণিজ্যের ভারসাম্য নষ্ট করছে বলে অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের।
পাশাপাশি, ২১টি দেশের বাণিজ্য পদ্ধতির বিরোধিতা করেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দফতর (ইউএসটিআর)। সেই তালিকায় আছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজ়িল, কানাডা, চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইৎজ়ারল্যান্ড, তাইওয়ান, তাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইংল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম।
এখন প্রশ্ন, দেশ ও শিল্পভেদে শুল্ক কত হতে পারে? এর আগে ট্রাম্প ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক আরোপ করেছে। বিদেশি গাড়ি, চিনা পণ্যের উপর চড়া শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। নতুন শুল্ক নীতিতে যুক্ত হতে পারে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর। অন্য দিকে, আগেই জানা গিয়েছে, ৪ এপ্রিল থেকে অটোমোবাইল (গাড়ি) এবং খুচরো যন্ত্রাংশের উপর উচ্চ হারে শুল্ক কার্যকর হবে। ওই সমস্ত পণ্যের উপরে প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, ট্রাম্প সরকারের নতুন শুল্ক নীতিতে আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। কারণ, এর পরে বিভিন্ন দেশও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ করতে পারে।
এখন ট্রাম্প ‘কুখ্যাত পঞ্চদশ’ বলে কাদের উপর কতটা শুল্কের খাঁড়া নামান, সে দিকে নজর বিশ্বের। এই আবহে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে চাইছে ভারত। তার পর বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে চাইছে নয়াদিল্লি।