বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩২

নতুন বছরে বার্সেলোনার জয়যাত্রা

স্পোর্টস ডেস্ক
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:১২
ছবি-সংগৃহীত

হান্সি ফ্লিকের অধীনে দুর্দান্তভাবে মৌসুম শুরু করলেও বছরের শেষদিকে এসে খেই হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে পুরনো ক্লেশ ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে ফের জয়যাত্রা শুরু করেছে দলটি।

শনিবার কোপা দেল রের ম্যাচে চতুর্থ স্তরের দল বারবাস্ত্রোকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বছর শুরু করা বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিল শক্ত প্রতিপক্ষ— আথলেতিক বিলবাও। তবে সেই পরীক্ষাতেও সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন বছরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে নানা সমস্যায় জর্জরিত কাতালানরা।

বুধবার রাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম সেমিফাইনালে বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।

ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন গাভি। অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করার মাঝে ৫২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন লামিন ইয়ামাল। সুযোগ পেয়েছিলেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়রাও তবে বার্সার অফসাইডের ফাঁদ আর নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে দলটির।

এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই বিলবাওয়ের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে বার্সেলোনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে উঠে পরপর দুটি সুযোগ তৈরি করেন জুল কুন্দে-রাফিনিয়ারা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে দুটিই মাঠে মারা যায়।

ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ৭০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে মাঠে একক আধিপত্য বিস্তার করে বার্সেলোনা। তবে এর পর খানিকটা ঝিমিয়ে যায় তারা। এ সময় সুযোগ কাজে লাগানোর পরিবর্তে ধীর লয়ে খেলতে থাকে বিলবাও-ও। ফলে ম্যাচের গতি বেশ পড়ে যায়। অবশ্য এর মধ্যেই ম্যাচর সপ্তদশ মিনিটে চকিতে আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।

পেদ্রির লং পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বিলবাওয়ের ডিফেন্স চিরে ছয় গজ বক্সের মধ্যে নিচু ক্রস দেন আলেহান্দ্রো বালদে। আর দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে তা থেকে গোল আদায় করে দলকে এগিয়ে নেন গাভি।

গোল পাওয়ার পর ফের উজ্জীবীত ফুটবলে ফেরে বার্সেলোনা। আরও পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে মনোযোগী হয় এরনেস্তো ভালভের্দের শিষ্যরাও। ফলে আবারও জমে ওঠে ম্যাচ।

ম্যাচের ২৩তম মিনিটে বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোনকে একা পেয়েও ফিনিশিংয়ের অভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফিনিয়া। তবে রাফিনিয়ার শট সিমোন ঠেকিয়ে দিলে তা চলে যায় পেছনে থাকা লামিনের কাছে। তিনি দুর্বল শট নিলে সেটিও প্রতিহত করে দলকে বিপদমুক্ত করেন সিমোন।

প্রথমার্ধের শেষের মিনিট দশেক সমতায় ফিরতে জোর চেষ্টা চালায় বিলবাও। একের পর এক আক্রমণেও ওঠে তারা। তবে ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতা আর বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের আর গোলের মুখ দেখা হয়ে ওঠেনি। ফলে ব্যবধানে ধরে রেখেই বিরতিতে যায় কাতালানরা।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার

প্রথমার্ধে ৫৩ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে ৬টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার চারটিই লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় তারা। অপরদিকে, বিলবাও পাঁচটি শট নিলেও তার মাত্র একটি লক্ষ্যে ছিল।

বিরতির পর মাঠে নেমে ফের নিয়ন্ত্রিত ফুটবল খেলতে থাকে বার্সেলোনা। তবে এ সময় গুছিয়ে খেলতে থাকে বিলবাও-ও। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাঝে দ্বিতীোর্ধের দশ মিনিট না পেরোতেই দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে বাস্কে প্রদেশের দলটি।

ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে সামনে এগোতে থাকা লামিনকে দারুণ একটি থ্রু বল বাড়ান গাভি, তা ধরে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের জাদুতে ঠিকানা খুঁজে নেন চোট থেকে প্রথমবার মাঠে ফেরা এই প্রতিভাবান তরুণ।

দ্বিতীয় গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় গোলটি পেয়ে যাচ্ছিল বার্সেলোনা। তবে রাফিনিয়া ছয় গজ বক্সের মধ্যে গোলমুখে থাকা রবের্ট লেভানডোভস্কিকে পাস বাড়ালেও পোস্টের বাইরে বল মেরে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন পোলিশ স্ট্রাইকার।

৬৫তম মিনিটের শুরতে বক্সের বাইরে থেকে বুলেট শটে বার্সা গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনিকে পরাস্ত করার চেষ্টা করেন বিলবাও মিডফিল্ডার মিকেল হাউরেগিসার, কিন্তু ক্যারিয়ারের প্রথম স্প্যানিশ সুপার কাপ ম্যাচ খেলতে নামা পোলিশ গোলরক্ষক সহজেই বল লুফে নেন। দুই মিনিট পর বার্সার বক্সের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ভীতি ছড়ায় বিলবাও, তবে একের পর এক অনুপযুক্ত পাসে ব্যবধান কমাতে পারেননি দলটির খেলোয়াড়রা।

৭৭তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে উঠে আরও একটি জোরালো শট হাঁকান বিলবাওয়ের বদলি নামা উইঙ্গার নিকো সেরানো, তবে সেবারও স্টান্সনিকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের ৮ মিনিট বাকি থাকতে বিলবাওয়ের ব্যবধান কমান সেরানো, কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।

৮৬তম মিনিটে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে চাপ দিয়ে বল ধরে এগিয়ে গিয়ে বিলবাওকে ফের গোল এনে দেন ইনিয়াকি উইলিয়ামস, কিন্তু এবারও বার্সার অফসাইডের ফাঁদে পড়েন তিনি।

অতিরিক্ত যোগ করা ৭ মিনিটের প্রথম মিনিটে সিমোন পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলে আরও একবার পরিষ্কার গোলের সুযোগ আসে বার্সেলোনার সামনে, কিন্তু ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষকের তৎপরতায় পরপর দুটি প্রচেষ্টাতেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা।

শেষ মিনিটে আরও একটি দুর্দান্ত লং পাস দেন পেদ্রি, আর তা থেকে গোল পেয়েই গিয়েছিলেন রাফিনিয়া। কিন্তু সিমোনের নৈপুণ্যে আরও একবার বঞ্চিত হয় বার্সেলোনা। ফলে ২-০ গোলের ব্যবধান ধরে রেখেই ফাইনাল নিশ্চিত করে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে ফ্লিকের শিষ্যরা।

আগামীকাল রাতে মায়োর্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে বর্তমান সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। ওই ম্যাচের বিজয়ী দলের অপেক্ষায় থাকবে কাতালান জায়ান্টরা।

মন্তব্য করুন