বিশ্বব্যাপী মানুষের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইলেকট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্য। পুরাতন বা নষ্ট স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপ থেকে তৈরি এসব পণ্য মানব শরীরে প্রবেশ করছে নানাবিধ জটিল রোগ সৃষ্টি করে।
ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মানুষের হাতে রয়েছে ১৬০০ কোটি মোবাইল ফোন। এর মধ্যে ইউরোপের নাগরিকদের হাতে থাকা এক-তৃতীয়াংশ ডিভাইস আর ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে এসব অকেজো ই-বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে জটিল রোগের ঝুঁকি। এসব ই-বর্জ্যের রাসায়নিক পদার্থের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গর্ভবতী মা ও শিশুরা।
২০২২ সালে পরিবেশ কর্মীদের চিন্তায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয় বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য বাড়তে থাকায়। ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম নির্মাণে যে তুলনায় মূল্যবান ধাতু নষ্ট হয়, তা পরিবেশের ওপর যথেষ্ট খারাপ প্রভাব ফেলে। এ ছাড়াও ইলেকট্রনিক তারের কপার নির্মাণে ব্যবহৃত কোবাল্টের ধাতু আসে খনি থেকে। ডিভাইসগুলো রিসাইকেল করা না হলে অথবা ডিভাইস নষ্ট হয়ে গেলে, তা থেকে দামি ধাতু সংগ্রহ করার উদ্যোগ না থাকলে বর্জ্য হিসেবে নষ্ট হয় মূল্যবান ধাতুগুলো।
বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়েস্ট ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইকুইপমেন্ট (ডব্লিউইইই) ফোরাম জানিয়েছে, চলতি বছর মোট ৫৩০ কোটি মোবাইল ফোন ই-বর্জ্যে পরিণত হবে। তারমধ্যে একটিকেও পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল করা যাবে না। এই ই-বর্জ্যগুলো তৈরি হচ্ছে ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে ট্যাবলেট কম্পিউটার ও জিপিএস ডিভাইসের মতো ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে। এই ই-বর্জ্য আজ থেকে ৮ বছর পর অর্থাৎ, ২০৩০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে সাত কোটি ৪০ লাখ টনের বেশি।
ডব্লিউইইই ফোরামের গবেষণায় উঠে এসেছে মোবাইল ফোনের মালিকদের অনেকেই পুরোনো ডিভাইস রেখে দিচ্ছেন নিজের কাছে। রিসাইকেল করার বদলে দিনের পর দিন তারা নিজের কাছেই ফেলে রেখেছেন সেই মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো। তবে তুচ্ছ জিনিসগুলোরও যে যথেষ্ট মূল্য রয়েছে, তা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছেন মানুষ। তারা বুঝতে শুরু করেছে অকেজো জিনিসগুলো এক সময় ঘটাতে পারে বিশাল দুর্ঘটনা।
মন্তব্য করুন