মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কলড্রপ: গ্রাহক-ভোগান্তিতে লাভ কার

আইটি ডেস্ক
  ১৭ নভেম্বর ২০২২, ১১:৫১

প্রায়ই মুঠোফোনে কথা বলার সময় লাইন কেটে যায়। স্পষ্ট শোনা যায় না। ভেঙে ভেঙে কথা আসে। হ্যালো হ্যালো বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে যান মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা। মুমূর্ষু রোগীর খোঁজখবর নেওয়া কিংবা বিপদে-আপদে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার সময় যদি এভাবে লাইন কেটে যায়, তাহলে মুঠোফোনের কি আর প্রয়োজনীয়তা থাকে? প্রযুক্তির ভাষায় এ সমস্যা ‘কল ড্রপ’ নামে পরিচিত।

সাধারণত, মুঠোফোন অপারেটরের সিগন্যাল যখন দুর্বল থাকে, তখনই ঘটে এই অনাকাঙ্ক্ষিত কল ড্রপ। এতে গ্রাহকেরা হয়রানির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, গত এক বছরে গ্রাহকেরা ৫২ দশমিক ৫৯ কোটিবার কল ড্রপের শিকার হয়েছেন এবং এতে তাঁদের ১৮ দশমিক ৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। বিটিআরসি কল ড্রপের প্রধান কারণ হিসেবে মুঠোফোন অপারেটরদের ফাইবার অপটিক কেব্‌লের সঙ্গে তাদের টাওয়ার সংযোগের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে। গ্রামীণফোন এখন পর্যন্ত তার বেস ট্রান্সসিভার স্টেশনের (বিটিএস) মাত্র ১২ শতাংশ ফাইবার অপটিক কেব্‌লে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এই হার রবির ক্ষেত্রে ১৮ এবং বাংলালিংকের ১৩ শতাংশ। 

কল ড্রপ হওয়ার মূল কারণগুলো হলো নেটওয়ার্ক না পাওয়া, নেটওয়ার্ক কভারেজ এলাকার বাইরে চলে যাওয়া, টাওয়ার ক্যাপাসিটির বেশি মানুষ একই সময় একই এলাকায় চলে আসার কারণে নেটওয়ার্কে জট তৈরি হওয়া (ওভারলোডেড) ইত্যাদি। কল ড্রপের এ অবস্থার জন্য অন নেট কল ও অফ নেট কলও অনেকটা দায়ী। অন নেট হলো একই অপারেটরে কল দেওয়া, আর অফ নেট হলো ভিন্ন অপারেটরে কল দেওয়া। অর্থাৎ অন নেট ০১৭ থেকে ০১৭ নম্বরে কল দেওয়া আর অফ নেট ০১৭ থেকে ০১৫, ০১৬, ০১৮-এ কল দেওয়া বোঝায়। গ্রাহকেরা গত এক বছরে অন নেট কলে ৩৭ দশমিক ৬ কোটি মিনিট এবং অফ নেট কলে ১৪ দশমিক ৯৯ কোটি মিনিট কল ড্রপের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এগুলো সবই অদৃশ্যমান। অর্থাৎ বিষয়গুলো খুবই টেকনিক্যাল ও ডিজিটাল হওয়ায় সাধারণ ব্যবহারকারী তা বুঝতে পারেন না। আর এ সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে মুঠোফোন কোম্পানিগুলো।

আবার ফোর-জি থেকে টু-জিতে নেটওয়ার্ক শিফট করলেও কল ড্রপ হতে পারে। এ ছাড়া লিফট, উঁচু ভবন, ভ্রমণের সময় বা আবহাওয়া খারাপ থাকলেও কল ড্রপ হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন জ্যামার, রিপিটার, বুস্টার ইত্যাদি ব্যবহারের কারণেও বিভিন্ন স্থানে কল ড্রপের ঘটনা ঘটে। প্রযুক্তিগত আরও যেসব কারণ কল ড্রপের জন্য দায়ী, সেগুলো হলো যে ব্যান্ডউইথ দিয়ে কথাবার্তা (ডেটা) আদান-প্রদান হয়, সেই ব্যান্ডউইথ/স্পেকট্রামের (জাতীয় সম্পদ) মূল্য অনেক বেশি। এ কারণে মুঠোফোন কোম্পানিগুলো সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম স্পেকট্রাম কিনে গ্রাহকদের বিতরণ করে।

উল্লেখ্য, সরকার ২০১৮ সাল থেকে স্পেকট্রামের মূল্য বিভিন্ন ব্যান্ডউইথভেদে ২ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে।

মন্তব্য করুন