যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজ পান না অনেকেই। ক্লায়েন্টের সঙ্গে সঠিকভাবে কাজ নিয়ে আলোচনার পদ্ধতি না জানা বা চাহিদা না বুঝে ভুল বার্তা পাঠানোই এর অন্যতম কারণ। ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই শুরুতে এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেও বেশ কিছু কৌশল কাজে লাগিয়ে ক্লায়েন্টদের আস্থা অর্জন করেছেন তাঁরা। আর তাই অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সঠিক নিয়মে কাজের প্রস্তাব পাঠানোর উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমেই সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট যে দেশে বসবাস করেন, সে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান জানতে হবে। এরপর সেই দেশের সময় অনুযায়ী ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজের প্রস্তাব বা প্রোপোজাল পাঠাতে হবে। ভুল সময়ে কাজের প্রস্তাব পাঠালে ক্লায়েন্ট অনলাইনে না থাকায় সেটি তাৎক্ষণিক পড়তে পারেন না। পরের দিন তিনি যখন কাজ শুরু করবেন, ততক্ষণে আপনার মতো অনেক ফ্রিল্যান্সারের কাজের প্রস্তাব তাঁর কাছে জমা হয়ে যাবে। ফলে আপনার বার্তা ক্লায়েন্টের চোখ এড়িয়েও যেতে পারে। তাই ক্লায়েন্ট যে দেশে বসবাস করেন, সে দেশের কর্মঘণ্টা অনুযায়ী কাজের প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
কাজের প্রস্তাব পছন্দ হলে ক্লায়েন্টরা সাধারণত ফিরতি বার্তা পাঠান। বেশির ভাগ সময় একাধিক ফ্রিল্যান্সারকে ফিরতি বার্তা পাঠান ক্লায়েন্টরা। ফলে আপনি দেরিতে বার্তার উত্তর পাঠালে ক্লায়েন্ট অন্য কোনো ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দিয়ে দেবেন। এ জন্য ফ্রিল্যান্সারদের সব সময় অনলাইনে থাকতে হবে। কারণ, ক্লায়েন্টের বার্তা আসার পর দ্রুত যোগাযোগ করলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগের সময় বার্তার ভাষাগত ত্রুটির কারণে আমরা শুরুতেই অন্য ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ি। কারণ, বার্তার শুরুতেই আমরা লিখে থাকি, ডিয়ার স্যার/ম্যাডাম। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টরা নাম ধরে সম্বোধন করতে অভ্যস্ত। আর তাই ক্লায়েন্টদের নাম ধরে যেমন হাই জেমস/লিন্ডা লিখে সম্বোধন করতে হবে। এ জন্য অবশ্যই ক্লায়েন্টের নামের বানান শুদ্ধ হতে হবে। তিনি যেভাবে বানান লেখেন, সেভাবেই নাম লিখতে হবে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক (রিভিউ) অপশনে খোঁজ করলেই ক্লায়েন্টের নাম জানা যাবে। কারণ, কোনো না কোনো ফ্রিল্যান্সার তাঁর নাম উল্লেখ করে তাঁর সম্পর্কে ভালো বা খারাপ রিভিউ দিয়েছেন।
এবার আপনার পাঠানো কাজের প্রস্তাবে ক্লায়েন্ট যেসব বিষয়ে জানতে চান, শুধু তা উল্লেখ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের কাজ আপনি কীভাবে করবেন, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি একই ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে উল্লেখ করতে হবে। আপনাকে কাজ দিলে ক্লায়েন্টের কী উপকার হবে, সে বিষয়ও লিখতে হবে। মনে রাখবেন, একাধিক ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে আলোচনা করে যাঁকে সবচেয়ে বেশি যোগ্য মনে হবে, তাঁকেই কাজ দেবেন ক্লায়েন্ট। এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না।
দ্রুত বার্তা পাঠানোর জন্য অনেকেই একই বার্তা একাধিক ক্লায়েন্টকে পাঠিয়ে থাকেন। এই কাজ কোনোভাবেই করা যাবে না। কারণ, সব ক্লায়েন্টের কাজের চাহিদা একধরনের হয় না। ফলে প্রতিটি ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝে নতুন বার্তা পাঠাতে হবে। বার্তা পাঠানোর সময় বানান বা ভাষাগত ত্রুটি যেন না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, ক্লায়েন্টরা কখনোই আনাড়ি লোককে দিয়ে কাজ করান না। বানান বা ভাষাগত ভুল করলে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে ক্লায়েন্টের মনে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। তাই ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগের সময় সতর্ক থাকতে হবে।
প্রতারক সব জায়গায়ই আছে। আর তাই যেসব ক্লায়েন্টের পেমেন্ট অপশন ভেরিফায়েড রয়েছে, তাঁদেরই কেবল কাজের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। এ ক্ষেত্রে নাইজেরিয়াসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশের ক্লায়েন্টদের কাজ না করাই ভালো।
মন্তব্য করুন