শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২

স্ট্রোক প্রতিরোধে রোজার ইতিবাচক প্রভাব

ধর্ম ডেস্ক
  ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৮

গবেষণা দেখা গেছে, রোজা ওজন কমাতে ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম। রমজান মাসে রোজা রেখে স্ট্রোকের ঝুঁকি কীভাবে কমানো সম্ভব তা নিয়েই এ আলোচনা।

▶ উপবাস আমাদের শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা সরাসরি স্ট্রোক ও হার্টের রোগের প্রবণতা কমিয়ে আনে।

▶ গবেষণায় দেখা গেছে, উপবাস লিপিড প্রোফাইলকেও প্রভাবিত করে ও শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে আনে। ফলে রক্তের কোলেস্টেরল হ্রাস পায়, যা স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং অন্য রোগগুলোর ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

▶ রমজানের উপবাসের ফলে রক্তচাপ হ্রাস পায়, যা উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

▶ উপবাসের কারণে আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে আসে ও ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ফলে পরোক্ষভাবে স্ট্রোক ও হার্টের রোগের প্রবণতা কমে আসে।

▶ রোজা, হার্ট রেইট বা হৃদস্পন্দন, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, রক্তে অতিরিক্ত সুগারের মাত্রা ও উচ্চরক্তচাপ কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগের জটিলতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়, যা পরোক্ষভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

▶ রোজায় শারীরিক অটোফেগি প্রক্রিয়া ও ব্রেইনের নিউরোপ্লাসটিসিটি প্রক্রিয়া অধিকতর সক্রিয় থাকে এবং এর মাধ্যমে ব্রেইনের কোষগুলোর মধ্যে নতুন নতুন সংযোগ স্থাপন হয় ও স্নায়ু সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

* যাদের জন্য রোজা পালন করা ঝুঁকিপূর্ণ

▶ সম্প্রতি স্ট্রোক হয়েছে।

▶ যাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই।

▶ টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস ও যাদের রক্তের সুগারের পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত।

▶ সম্প্রতি হার্ট অ্যাটাক হয়েছে অথবা নিয়মিত ওষুধ সেবনের পরও বুকে ব্যথা ও চাপ অনুভব করেন অথবা সম্প্রতি হার্টের বাইপাস অপারেশন হয়েছে।

* রোগীদের করণীয় (খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম)

▶ ইফতারিতে যে খাবারগুলো গ্রহণ করি তার অধিকাংশই অতিরিক্ত তেলে ভাজা। এগুলো সব খারাপ চর্বিতে ভর্তি থাকে। যা উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ইফতারে ভাজাপোড়া পরিহার করুন।

▶ ফল, শাকসবজি, ওটস, পুরো রুটি বা ব্রাউন রাইসের মতো খাবার অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। এ ধরনের খাবার দেহকে এমন শক্তি দেয় যা বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে মুক্তি পায়।

▶ ইফতারে একসঙ্গে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।

▶ লবণ এবং নোনতা খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলো আপনার শরীরকে পানিশূন্য করে তুলতে পারে, যা রক্তচাপের জন্য মোটেও ভালো নয়।

* ডায়াবেটিসের রোগীদের করণীয়

▶ অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

▶ উপবাসের সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম, অতিরিক্ত ঘাম ঝরানো থেকে বিরত থাকবেন। পানিশূন্যতা হচ্ছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে।

▶ ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও হার্টের রোগীদের নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তবে রমজানে ব্যায়ামের উপযুক্ত সময় হচ্ছে সন্ধ্যা। সকাল বা বিকালে ব্যায়াম করতে গেলে পানিশূন্যতা, দুর্বলতা বেড়ে যেতে পারে।

* ওষুধ সেবনের নিয়ম

▶ রোজার মাসে ওষুধ সেবন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।

▶ ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।

▶ নিয়মিত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ সেবন করতে হবে।

▶ প্রয়োজনীয় হার্টের ওষুধ, স্ট্রোক প্রতিরোধকারী ওষুধ নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।

▶ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চর্বি কমানোর ওষুধ সেবন করতে হবে।

লেখক : সহকারী রেজিস্ট্রার, নিউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসাইন্স ও হাসপাতাল।

মন্তব্য করুন