নেপাল-বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভে চাঁদপুরের আবরার ইসলাম আরিয়ানের যোগদান করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ ও নেপালের নাম উপরের সারিতেই রয়েছে। কিন্তু তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার দিক থেকে এই দুই দেশের হয়তো খুব বেশি কিছু করার নেই। কারণ সমস্যাটা বৈশ্বিক। তবে দেশ দুটির তরুণরা বেশ কয়েক বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এ বিষয়ে যে কয়েকটি ইভেন্টের মাধ্যমে দুই দেশের তরুণদের মাঝে সংযোগ সেতু স্থাপিত হয়েছে, তার মধ্যে নেপাল বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভ (এনবিওয়াইসি) অন্যতম। গত ১৭ থেকে ২০ ডিসেম্বর (২০২৪) নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে বাংলাদেশ ও নেপালের অর্ধশত যুব প্রতিনিধি আয়োজনটির অষ্টম আসরে অংশগ্রহণ করেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে পারস্পরিক আলোচনা করা হয় এই ইভেন্টের মাধ্যমে।
এছাড়া নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর থ্রি-জিরো থিওরির উপর প্রেজেন্টেশন দেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা পাশাপাশি দুই দেশের সঙ্গীত, নৃত্য, চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও নেপালের সাংস্কৃতিক যোগাযোগও পরিলক্ষিত হয়। আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেপালের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী তেজুলাল চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশটির সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী গণেশ সাহ। বক্তারা জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা ও এসডিজি বাস্তবায়নে জনসচেতনতা তৈরিতে সম্মেলনের প্রতিপাদ্যের ওপর জোর দেন।
কনক্লেভের মূল পর্বে অংশগ্রহণকারী যুবনেতারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ৬৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে। যেভাবে উষ্ণতা বাড়ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরে তিন থেকে চার কোটি মানুষ বাস্তুহারা হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য যতো কার্বন নিঃসরণ হয়, সেখানে বাংলাদেশ-নেপালের মতো দেশগুলোর দায় খুবই সামান্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনের মতো দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ না কমালে, পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের মতো গরীব দেশগুলোর পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।সম্মেলনের শেষ দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র ও ক্রেস্ট বিতরণ করেন কনক্লেভের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কো-অর্ডিনেটর চন্দন কুমার বর্ম্মণ। সমাপনী দিনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে বাংলাদেশ ও নেপালের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তাজকিরা হক তাজিনের সঞ্চালনায় সমাপনী বক্তব্যে নেপাল-বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভের সমন্বয়ক অভিনব চৌধুরী জলবায়ু চ্যালেঞ্জ শনাক্তকরণ ও সমাধান খুঁজে বের করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ থেকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ৪০ জনকে সিলেক্ট করা হয়েছে। নেপাল বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভ ৮ম সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে নেপালে যুব ক্ষমতায়ন এবং নেতৃত্ব, শিক্ষা নিয়ে এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও ৩ জিরো নিয়ে বিশ্বব্যাপী যুবসমাজ এবং সংস্কৃতির অন্যান্য সাইট সম্পর্কে এবং তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে। চাঁদপুর জেলা থেকে আল আবরার ইসলাম আরিয়ান বাংলাদেশ ও নিজ জেলা চাঁদপুরের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে।
দেশে এসে তিনি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন এবং জেলা প্রশাসক তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইভেন্টে বাংলাদেশ আর নেপাল ছাড়া অন্য কোনো দেশের প্রতিনিধি ছিল না।
উল্লেখ্য, এর আগেও তিনি গ্লোবাল অ্যাকশন নামে একটি সংস্থা ডিপ্লোমেসি এডুকেশন নামে শিক্ষা কার্যক্রমের চূড়ান্ত ধাপে অংশ নেওয়ার জন্য ইতালির রোম শহরে গমন করেছেন। সেখানে জাতিসংঘের পরিচালিত একটি মডেল ইউনাইটেড ন্যাশন (MUN) কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। সেখানে বাংলাদশের মধ্যে দুইজন প্রতিনিধিত্ব করেন তার মধ্যে তিনি একজন।
মন্তব্য করুন