বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর ইউনিটিতে’ অংশ নিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনস্রোতের ঢল নেমেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ছাত্র-জনতা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কেন্দীয় শহীদ মিনারে সমাবেত হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা ছাত্র-জনতা আলাদা ব্যানার নিয়ে শহীদ মিনারে হাজির হচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা যেন জনসমুদ্রের ঢল নেমেছে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা বিপ্লবীরা সকাল থেকে শহীদ মিনারে ও আশপাশে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
মানিকগঞ্জ থেকে আসা লুৎফর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার হাত ধরে চব্বিশ সালে আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। আজ বিপ্লবীদের মিলনমেলা। আমরা একতাবদ্ধ এটা প্রমাণ করতেই শহীদ মিনারে হাজির হয়েছি। ছাত্র-জনতার হাত ধরে আসা এই স্বাধীনতার মাধ্যমে দেশটাকে নতুন করে গড়তে চাই।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশের মঞ্চে, আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম, আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে, একটা একটা খুনি ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর, দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এছাড়া কর্মসূচিতে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া আহতরাও এসেছেন। এর আগে অভ্যুত্থান পরবর্তী জুলাই প্রক্লেমেশন বা জুলাই ঘোষণার প্রকাশের কথা জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই প্রক্লেমেশন ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত আসায় আগের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসেছে সংগঠনটি।
সোমবার দিবাগত রাতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন,জুলাই-আগস্টে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত জন-আকাঙ্ক্ষা তথা ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক পটভূমিতে আবির্ভূত হয়েছে।
হাজারো শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দলিলস্বরূপ 'জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র' অত্যাবশ্যক ছিল। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর বর্তায়। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রের প্রণয়ন ও ঘোষণার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়পোযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।
মন্তব্য করুন