তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইলের মসজিদটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। এ মসজিদটি তাবলিগ জামাতের মারকাজ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
সম্প্রতি তাবলিগের জুবায়েরপন্থিরা মসজিদটি দখলে রাখার ঘোষণা দেওয়ার দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত কোনো সংঘাত ছাড়াই আগামী দুই সপ্তাহের জন্য কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয় তারা।
শুক্রবার সকালে সাদের অনুসারীরা কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নেন। তাবলিগ জামাতের কাকরাইল মসজিদে অবস্থান করা নিয়ে আগে থেকেই সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রশাসন। সেই নীতিমালা সামনে রেখেই শান্তিপূর্ণভাবে তারা মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নেন।
তাবলিগ-জামাতের বিবাদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত ৭ বছর যাবত প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা কেন্দ্রিক সাদপন্থিদের কোনোরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে ২৪ ঘণ্টার নোটিশে রাজধানী ঢাকা অচল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বুধবার পালটা সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থিরা জানান, কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদ্রাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতপন্থি আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা করছি।
সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে উভয় পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন দরকার। এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে পূর্বের মতো কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমা ও সারা দেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না।
এছাড়া কাকরাইল মার্কাজ (তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়) সম্পূর্ণভাবে নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়াসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা।
পরে বুধবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যস্থতায় আগের সিদ্ধান্ত মেনে চলার ঘোষণা দেয় জুবায়েরপন্থিরা।
গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জুবায়েরপন্থিদের সমর্থক ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের মহাসম্মেলন থেকে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে করাসহ ৯ দফা দাবি জানানো হয়। ১৫ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদ থেকে না সরার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
মন্তব্য করুন