দেশ নাটকের প্রযোজনায় নিত্যপুরাণ নাটকটি মাঝ পথে বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন কর্তৃক সম্প্রতি এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। নিত্যপূরান বন্ধের ঘটনা ছিল দেশের নাটকের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।
বিকেল চারটায় শিল্পকলা একাডেমির মূল গেটে চলমান এ প্রতিবাদ সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে যখন সর্বজন শ্রদ্ধেয় নাট্যজন মামুনুর রশীদ বক্তব্য রাখেন, তখন কিছু দুষ্কৃতিকারীরা দুদকের গেটের দিক থেকে সমাবেশ লক্ষ্য করে ইট ও ডিম ছুড়ে মারে। এতে অনেকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ফলে সমাবেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু নাটাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
নাট্যকর্মীরা তখন মুহর্মুহু স্লোগান দিতে থাকে 'নাটক মোদের অধিকার রুখবে নাটক সাধ্য কার।" সমাবেশের পাশে দায়িত্বরত পুলিশ ও সেনাবাহীনীর সদস্যরাও এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। কিন্তু তারা কোন জোরালো পদক্ষেপ নেননি। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে সমাবেশের কাজ আবার শুরু হয় এবং মামুনুর রশীদ তার বক্তব্য শেষ করেন।
কিছুক্ষণ পর হামলাকারীরা আবার কিছুটা বর্ধিত সংখ্যায় ফিরে আসেন এবং নাটক ও নাট্যকর্মীদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে সমাবেশের দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের গতিরোধ করলে তারা সেখানে দাড়িয়েই নাটকবিরোধী নানান উত্তেজক শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাঁরা ফিরে গিয়ে আবার হ্যান্ডমাইক নিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে ফিরে আসেন এবং রাস্তায় বসে অবস্থান করতে থাকেন। নাটক দেখতে আসা অনেক দর্শক এ পরিস্থিতি দেখে শিল্পকলা একাডেমি ছেড়ে যান।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে দুষ্কৃতিকারীদের তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতারের আহ্বান জানান। এই হামলাকে দেশের শিল্প সংস্কৃতির ওপর হামলা এবং একে দেশের সাংস্কৃতিচর্চা ব্যাহত করার এক গভীর চংক্রান্ত বলে মনে করেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের কর্মীরা।
শিল্পচর্চার এই প্রতিকূল পরিস্থিতি দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে বলে মনে করেন তারা।
চরম নিন্দনীয় এ ঘটনার নিরেপক্ষ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে এবং বাধাহীন নাট্যচর্চার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানান শিল্পীরা।
মন্তব্য করুন