শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১

মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে ইলিশ ধরা

প্রবাহ বাংলা নিউজ
  ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:১৯

আজ মধ্য রাত থেকেই টানা ২২ দিনের জন্যে বন্ধ হচ্ছে ইলিশ ধরা। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে ইলিশ ধরা। যা অব্যাহত থাকবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও সংরক্ষণ সম্পন্ন নিষিদ্ধ থাকবে। এতে বেকার হয়ে পড়বে চাঁদপুর, বরিশাল, মতলব উপজেলার পদ্মা ও মেঘসা পাড়ের কয়েক হাজার জেলে। যে কারণে অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন তারা। এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধে তাদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার ভাজ। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়ে তালিকাভুক্ত প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফ এর চাল দেওয়া হচ্ছে। জেলেরা বলছেন, এবার ভরা মৌসুমে পদ্মায় ইলিশ কম থাকায় অনেকেই দেনার দায়ে জর্জরিত। এরই মধ্যে আবার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলে আশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অভিযান চালানো হবে। আর জেলেদের সংকট দূর করতে নিবন্ধিত জেলে0দের দেওয়া হচ্ছে ২৫ কেজি করে চাল।  জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলা, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, হাইমচর উপজেলার ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত কয়েক হাজার জেলের মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। মৎস্য বিভাগের তালিকাভুক্ত জেলেদের জন্য জেলায় বিতরণ করা হবে ১১৭.২৫ টন চাল। তালিকাভুক্ত প্রত্যেক জেলেকে দেওয়া হবে ২৫ কেজি চাল।

দৌলতদিয়া পদ্মা পাড়ের বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, যেহেতু ২২ দিনের জন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকবে, তাই ঘাটে ভেড়ানো হচ্ছে নৌকা-ট্রলার। কেউ কেউ আবার নিষেধাজ্ঞার আগে শেষবারের মতো নদীতে যাচ্ছেন মাছ ধরতে। তবে তাদের ফিরতে হবে আজ রাত ১২টার আগেই। কেউ কেউ আবার আগে থেকেই জাল, নৌকাসহ মাছ ধরার সব উপকরণ তুলে এনেছেন ঘাটে।

রাজবাড়ী সদরের গোদারবাজার, মৌলভিঘাট, লালগোলা, বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা, গোয়ালন্দের অন্তরমোড় থেকে দৌলতদিয়া চর কর্নেশন পর্যন্ত দেখা যায়, পদ্মা পাড়ের কিছু অসাধু মৌসুমী জেলেরা মাছ ধরার জন্য নতুন ইঞ্জিন, জাল, নৌকা সংস্কার করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। মৌসুমী জেলেরা সারাবছর নদীতে মাছ না ধরলেও বেশি মাছ ও লাভের আশায় অবৈধভাবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ সময় জাল নিয়ে নদীতে নেমে পড়ে। তাদের সঙ্গে কিছু প্রকৃত জেলেরাও মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। সেই সঙ্গে মাছ ক্রয়ের জন্য অনেক মৌসুমী মাছ বেপারী অধিক মুনাফার প্রস্ততি নিচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার জেলে শুকুর হালদার বলেন, মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে, তাই জাল ও নৌকা নিয়ে তীরে এনে রেখেছি। নিষেধাজ্ঞা সময়ে সরকার জেলেদের জন্য যে চাল দেবে, তা দ্রুত বিতরণের দাবি জানাই। আরেক জেলে অসেল হালদার বলেন, ইলিশ ধরা ২২ দিন নিষেধ, এ সময় এনজিওর কিস্তির টাকা আদায় যদি বন্ধ থাকতো, তাহলে কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারতাম। সরকারের দেওয়া ২৫ কেজি চালে আমাদের কিছুই হয় না। এদিকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে নৌ পুলিশ। তারা বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় শক্ত অভিযানের কথা।

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ছগির মিয়া বলেন, ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় আমরা নিয়মিত নদীতে অভিযান চালাব। নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশসহ কোনো মাছ যাতে কেউ ধরতে না পারে ও নদীতে নামতে না পারে সেজন্য আমাদের টিম সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে। আমরা ঘাটে ঘাটে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সচেতনতামূলক সভা এবং লিফলেট বিতরণ করেছি। রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, ইলিশ অভিযান সফল হলে নদীতে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে। তাই অভিযান সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন