সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়া এ কথা বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে এটি ড. ইউনূসের দ্বিতীয় ভাষণ। গত ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সাড়ে ১২ বছর পেরিয়ে গেছে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনার। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার সময় ১১১ বার বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছে সাংবাদিকমহল এবং তাদের বিভিন্ন সংগঠন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ গতকাল শনিবার বলেন, ‘সাগর-রুনি দুজনই ডিআরইউয়ের স্থায়ী সদস্য ছিলেন। তাঁদের হত্যাকাণ্ডের এত বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্তের অগ্রগতি নেই। এ নিয়ে আমরা ডিআরইউ পরিবার খুবই হতাশ।
তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর আশা থাকবে, তাদের কিভাবে হত্যা করা হয়েছে, কারা হত্যা করেছে, তাদের শনাক্ত করে জনসমক্ষে এনে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে তাঁদের ছেলে মেঘ (১৭) বড় হচ্ছে; তার পাশে যেন সরকার দাঁড়ায় সেই আহ্বান রইল।’
গত ১৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড খুবই বেদনাদায়ক, খুবই নির্মম এবং এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে কী পরিমাণ প্রহসন করা হয়েছে। বারবার তার (তদন্ত) প্রতিবেদনগুলা পেছানো হয়েছে।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ এই ধরনের যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন হয়েছে এই বিষয়গুলোর তদন্ত করতে হবে এবং সরকারের জায়গা থেকে যে ভূমিকা বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে যে ভূমিকা তা আমরা অবশ্যই পালন করব।’
তখন সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের নতুন করে তদন্ত হবে কি না, জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এটার বিচার চাচ্ছি। এটা নিয়ে আমরা আর কোনো ধরনের প্রহসন, কোনো ধরনের টালবাহানা চাচ্ছি না।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাঁদের ভাড়া বাসায় খুন হন। তাঁদের একমাত্র ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ (৫) সে সময় বাড়িতে ছিল।
হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলানগর থানায় মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি।
মন্তব্য করুন