বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রবণশক্তি কমে আসার বিষয়টি স্বাভাবিক ও খুবই পরিচিত ঘটনা। কিন্তু, এখন ছোটদের কানের সমস্যা বেশি হচ্ছে। অনেক সময়ে তা হতে পারে কনজেনিটাল, অর্থাৎ জন্মগত বধিরতা।
তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, স্কুলে যাচ্ছে যে শিশুরা, বা কিশোর-কিশোরীরা, তাদের শ্রবণশক্তির সমস্যা হচ্ছে। ছোট থেকেই কানে কম শোনা বা কিছু ক্ষেত্রে বধিরতার লক্ষণও দেখা দিচ্ছে। তাই ছোট থেকেই মা-বাবাদের সমস্যা চিহ্নিত করে সাবধান থাকা দরকার।
এই বিষয়ে চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলছেন, মাতৃগর্ভে থাকাকালীন মায়ের শরীরে কোনও সংক্রমণ হলে, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে, শিশুদের জন্ডিস বা মেনিনজাইটিসের মতো অসুখ হলে শৈশবেই কমবেশি শ্রবণশক্তি চলে যেতে পারে।
খুব ছোট অবস্থায় চিকিৎসা শুরু না হলে একটু বড় হওয়ার পরে শিশুর কথা বলাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দুগ্ধপোষ্য শিশু থেকে স্কুলে যাওয়া পড়ুয়াদের (ছ’বছর বয়স পর্যন্ত) কানের সমস্যা হয় বেশি।
প্রিয়ঙ্করের কথায়, শিশুদের সাধারণত কানে ব্যথা হওয়া, কান চুলকানো, কান দিয়ে জল বেরনো বা পুঁজের মতো চটচটে আঠালো রস বার হওয়া— এমন নানা সমস্যা দেখা দেয়। কানে সংক্রমণ জনিত কারণেও সমস্যা হতে পারে। আবার উচ্চস্বরে হেডফোন বা ইয়ারফোনে গান শুনলেও শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। স্কুলপড়ুয়া অনেক শিশুরই এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
বাবা-মায়েরা কী ভাবে সাবধান থাকবেন?
১) কানের যে কোনও সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কান পরিষ্কারের জন্য তুলো লাগানো ‘স্টিক’ ব্যবহার করা চলবে না।
২)শিশুকে একটানা কানে হেডফোন বা ইয়ারফোন লাগিয়ে গান না শুনতে শেখান। যদি স্কুল বা ক্লাসের প্রয়োজনে কানে হেডফোন লাগাতেই হয়, তা হলে মাঝে ১০ মিনিট করে বিরতি নিতে হবে।
৩) অসাবধানবশত কানের ভিতরে জল ঢুকলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে পুঁজের মতো তরল তৈরি হয়। তার থেকেও কানে সংক্রমণ হতে পারে। তাই স্নানের সময়ে শিশুর কানে জল ঢুকেছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখে নেবেন।
৪) মায়েরা স্তন্যপান করানোর সময়ে বা বোতলে দুধ খাওয়ানোর সময়ে শিশুদের মাথা সমতলে না রেখে উঁচু করে রাখলে জল, দুধ কানে ঢোকার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম থাকে। সে বিষয়েও সচেতন থাকা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন