কখন বেরোচ্ছেন, কখন বাড়ি ঢুকছেন তা নিয়ে বাড়ির সদস্যদের যত না মাথা ব্যথা, তার চেয়ে অনেক সময় বেশি ভাবনা হয় পড়শিদের।
শহর থেকে শহরতলি, গ্রামাঞ্চল বিভিন্ন জায়গায় ছবিটা বিভিন্ন রকমের। বড় শহরে পাশের ফ্ল্যাটের লোক কী করছেন তা নিয়ে কারও মাথা ব্যথা অবশ্য আজকাল থাকে না। তবে নীরবে যে একেবারেই কেউ নজর রাখেন না, এমনটা হয়তো নয়!
প্রতিবেশী, আপদে-বিপদে যাঁদের পাশের থাকার কথা, কখনও কখনও তাঁরাই হয়ে ওঠেন বিড়ম্বনার কারণ। শহরাঞ্চলে সাধারণত অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে পড়শিদের নাক গলানোর প্রবণতা না থাকলেও, সমস্যা বাঁধে অন্য জায়গায়।
আবাসনে পোষ্যকে খাওয়ানো-ঘোরাঘুরি, উচ্চ স্বরে গান বাজানো, কখনও মধ্যরাত পর্যন্ত পার্টি করায় পড়শীদের অসুবিধা হয়। কিন্তু অসুবিধার কথা বলতে গেলেই সমস্যা। সমাধানের বদলে ঝগ়ড়া বেঁধে যায়। যার জের এসে পড়ে মানসিক ভাবেও।
গ্রামাঞ্চল থেকে অজ গ্রামে সমস্যাটা খানিক ভিন্ন। সেখানে এখনও কিছু মাসিমা, কাকিমা থাকেন যাঁদের কাজ অন্যের হাঁড়ির খবর নেওয়া স্বভাব। প্রকাশ্যেই হয়তো এমন ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে ফেললেন, যে দুম করে মাথা গরম হয়ে যায়। কিন্তু প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে একলা হয়ে তো বসবাসও করা যায় না।
কারণ, অতিরিক্ত কৌতূহল দেখালেও, তাঁরা সবসময় খারাপ হন না। সম্পর্কটা অনেক সময়ই হয়ে ওঠে কিঞ্চিৎ অম্ল-মধুর। তা হলে কী করবেন? মুখের উপর জবাব দেবেন, না এড়িয়ে যাবেন? সমাধান কোন পথে?
শান্ত ভাবে কথা বলা- হয়তো ব্যক্তি জীবনে সমস্যায় রয়েছেন। কর্মক্ষেত্রেও চাপ। এমন সময় পড়শির বাড়ি থেকে উচ্চ স্বরে গানবাজনার শব্দ এলে মাথা গরম হয়ে যেতে পারে। কিংবা ব্যক্তিগত প্রশ্নে দুম করে রাগ চড়ে যাওয়া স্বাভাবিক।
তবে, আলোচনা করতে গেলে উচ্চ স্বরে কথা না বলে, শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে এ বিষয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে।
অন্যের কথা শুনুন- শুধু উচ্চমাত্রায় গান চালানো নয়, পোষ্য, জমি-সহ নানা বিষয়ে প্রতিবেশীর অভিযোগ থাকতে পারে। আপনারও থাকতে পারে। তাই যখন মেজাজ ঠান্ডা থাকবে তখন মুখোমুখি কথা বলুন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী কী বলছেন, কেন বলছেন, সেটা বোঝাও খুব জরুরি।
সীমারেখা জরুরি-অনেক সময় ব্যক্তিগত মেলামেশা, কাজকর্ম, বেতন সমস্ত কিছুতেই পড়শিদের কারও কারও বাড়তি উৎসাহ থাকে। তাঁদের কাজ কার্যত অন্যের বাড়ি ও সদস্যদের উপর গোয়েন্দাগিরি করা।
এ নিয়ে পাড়ায় মুখরোচক গল্প বলা। সাধারণত, গ্রামাঞ্চলে ও গ্রামের দিকে এমনটা বেশি হয়। সেক্ষেত্রে স্পষ্ট ভাবে সেই পড়শিকে বলে দিন তিনি যেন ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক না গলান। আপনার বলার মধ্যে দৃঢ়তা থাকা খুব প্রয়োজন। কিংবা প্রাথমিক ভাবে এই ধরনের মানুষগুলিকে এড়িয়ে যেতে পারেন।
সমাধানে মধ্যস্থতা- পোষ্য, পাম্প চালানো, জল ব্যবহার, আবাসনের খরচ দেওয়া নিয়েও বিভিন্ন ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। অফিসের চাপ সামলে এই ধরনের ঝামেলা মানসিক চাপ তৈরি করে। এতে সম্পর্কও নষ্ট হয়। তার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতায় আসা যেতে পারে।
মন্তব্য করুন