সন্তান বুদ্ধিমান হোক, সব বাবা-মা তাই চান। সন্তানকে ছোট থেকেই নানা বিষয়ে পারদর্শী করে তোলার চেষ্টা অনেক বাবা-মাই করেন। কিন্তু জানেন কি, শিশুর জন্মের পর থেকেই তার নানা স্বভাব ও অভ্যাসই বলে দিতে পারে সে আদৌ মেধাবী ও বুদ্ধিমান হবে কি না।
তাই শিশুর ওপর চাপ না দিয়ে বরং তার স্বাভাবিক স্বভাব ও প্রবৃত্তিগুলিকে সামনে আসতে দেওয়া উচিত। খুদের নানা কাজকর্মের দিকে একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে, বুদ্ধিদীপ্ত হয়ে ওঠার লক্ষণ তার মধ্যে আছে কি না।
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এক বছরের আশপাশে পৌঁছলে তবেই শিশু দু’-একটা শব্দ বলতে শেখে। দেড় বছরের মাথায় তার কথা স্পষ্ট হয়। যদি দেখেন, সন্তানের মধ্যে আপনার কথা শোনার আগ্রহ আছে ও তা বলার চেষ্টাও করছে এবং নতুন কিছু শেখার প্রবণতাও তার আছে, তা হলে বুঝতে হবে সে মেধাবী হবেই।
স্কুলে পড়ার সময়কালে খুদের যদি সৃজনশীল কাজকর্মে আগ্রহ তৈরি হয় অথবা নানা বিষয়ে ভাবতে ওনিজের মতামত দিতে শিখে যায়, তা হলে বুঝবেন সে বুদ্ধিমান হবেই।
সন্তানের স্মৃতিশক্তি কেমন, তা-ও যাচাই করে দেখুন। এই বিষয়ে পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, অনেক শিশুরই স্মৃতিশক্তি বেশি। যদি দেখেন, স্কুলের পড়া অল্প সময়ের মধ্যে বুঝে যাচ্ছে ও তা মনেও রাখছে দীর্ঘদিন, তা হলে বুঝতে হবে তার স্মৃতিশক্তি ভাল। যে কোনও ছোট ছোট ঘটনা বা বিষয়, যদি নিখুঁত ভাবে মনে রাখতে পারে, তা হলে বুঝতে হবে সন্তানের স্মৃতিশক্তি খুবই উন্নত।
অচেনা কারও সঙ্গে শিশু কি সহজেই মানিয়ে নিতে পারে? যদি তেমন হয়, তা হলে যোগাযোগ ও সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আপনার সন্তান অনেকটা এগিয়ে। বাড়িতে পোষ্য রেখে সন্তানের ব্যবহার লক্ষ্য করে দেখতে পারেন। পোষ্যের প্রতি তার আচরণ কেমন, কতটা দায়িত্ব নিতে পারছে, পোষ্যের সঙ্গে কতটা সখ্য গড়ে তুলেছে খুদে— তা দেখলেই বোঝা যাবে ছোট থেকেই দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে তার মধ্যে।
নানা বিষয়ে শেখার কৌতুহলও কিন্তু ভাল লক্ষণ। বাবা-মায়েরা যদি দেখেন, যে কোনও বিষয়েই শিশু আরও বেশি জানতে বা বুঝতে চাইছে, নিজের মন থেকে নানাবিধ প্রশ্ন করছে, তা হলে বুঝতে হবে তার মধ্যে শেখার আগ্রহ আছে। শুধু তাই নয়, বুঝতে হবে তার ধৈর্য্যও বেশি। এইসব কিছুই তার প্রখর বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।
মন্তব্য করুন