দাঁতের যত্ন যে কত দরকার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কথায় বলে দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না! যাদের দাঁতে পোকা ধরে (ক্যাভিটি), তারাই হাড়ে হাড়ে টের পায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতার আগে দাঁত মাজতে হয়। ছোটবেলা থেকে এটাই শিখে এসেছি।
এরপর বিজ্ঞানীরা বললেন সকালে নয়, রাতে খাওয়ার পর দাঁত মাজলে আর পোকা ধরবে না। শুরু করলাম রাতে দাঁত মাজা। এখন গবেষকেরা বলছেন, শুধু রাতে নয়, সকালেও দাঁত মাজতে হবে এবং সেটা নাশতার আগেই! ব্যাপার কী? তাহলে কি আমাদের পূর্বপুরুষদের অভিজ্ঞতাই ঠিক ছিল? অনেকটা তাই। তবে একটু বিজ্ঞানের বিষয় আছে।
আসলে রাতে শোয়ার আগে একবার দাঁত মাজা দরকার। কারণ, সারা দিনের খাওয়ার পর কিছু খাদ্যকণা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে। সারা রাতে ওই সব খাদ্যকণায় ব্যাকটেরিয়া জমে। ওরা জমে থাকা খাদ্যকণা খায় আর অ্যাসিড তৈরি করে। দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়।
দাঁতে গর্তও হয়, যাকে আমরা বলি পোকা ধরা। তাই রাতে একবার দাঁত মাজলে ব্যাকটেরিয়া জমলেও ওরা কিছু খাবার পাবে না। অ্যাসিডও বের হবে না। যদি রাতে দাঁত মাজার আগে বা পরে সুতা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করি (ফ্লসিং) তাহলে আরও ভালো। যদিও অনেক বিজ্ঞানী বলেন, ফ্লসিংয়ে যে কতটা উপকার, তা আজও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। গবেষণা চলছে।
এখন রাতে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমাতে গেলেন। কিছু ব্যাকটেরিয়া কিন্তু দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমবে। অবশ্য ওরা খুব বেশি খাবার পাবে না। শুধু দাঁতের ওপর জমে ওঠা সাদা পদার্থের পরতে বা দন্তমলে (প্লাক) জড়ো হয়ে অপেক্ষায় থাকবে, কখন কিছু খাদ্যকণা পাওয়া যাবে।
যেহেতু ঘুমের মধ্যে মুখে লালা বের হয় না, তাই এই প্লাকে ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকা সহজ। এরা খুব দ্রুত কাজ করতে পারে। খাওয়া পেলেই মিনিট পাঁচেকের মধ্যে অ্যাসিড বের করতে থাকে, যা দাঁতের ক্ষতি করে। তাই সকালে খাওয়ার আগে দাঁত মাজলে ওই ব্যাকটেরিয়াগুলো নির্মূল হয়ে যায়। এরপর সারা দিনে মুখে প্রচুর লালা বের হয়। ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকা একটু কঠিন হয়। সে জন্য রাতে খাওয়ার পর ও সকালে খাওয়ার আগে, দুবার দাঁত মাজলে দাঁত নিয়ে ঝামেলা অনেক কমে যায়।
মন্তব্য করুন