সাধারণত নাস্তায় আমরা মুখরোচক বিভিন্ন খাবার খেয়ে থাকি। এখন যদি বলি, ভাজাপোড়া খাবার বাদ, আজ থেকে নাস্তায় খেতে হবে চিনাবাদামের মতো স্বাস্থ্যকর কিছু? আমাদের দেশে বাদাম বলতে প্রথমেই মনে পড়ে চিনাবাদামের নাম। পথে-ঘাটে অহরহ বিক্রি হয় ভাজা চিনাবাদাম। কিন্তু সে তো বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা অফিসে কাজের ফাঁকে অল্প-স্বল্প খাওয়া হয়। নাস্তা বলতে যা খাওয়া হয়, সেখানে চিনাবাদামের নাম থাকে কই! আপনি যদি জানেন এর উপকারিতাগুলো কী, তাহলে এখন থেকে নাস্তায় চিনাবাদাম খাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ওজন কমায়
আপনি কি খেয়ে ওজন কমাতে চান? আচ্ছা, একমুঠো চিনাবাদাম খান! চিনাবাদাম বা পিনাট বাটার নিয়মিত খেলে তা স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সপ্তাহে অন্তত দুইবার চিনাবাদাম খান তাদের স্থূলতা কম হয়। সকালে পাউরুটির সঙ্গে পিনাট বাটার খেলে তা ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়। যে কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
প্রতিদিন চিনাবাদাম খেলে তা কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে এবং অনেক রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে পারে। চিনাবাদামে রয়েছে মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (MUFA), বিশেষ করে ওলিক অ্যাসিড, যা LDL (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে এবং HDL (ভালো কোলেস্টেরল) মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি করোনারি ধমনী রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এবং স্বাস্থ্যকর রক্তের লিপিড প্রোফাইল বজায় রেখে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে।
অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য
তারুণ্য কে না ধরে রাখতে চায়? চিনাবাদাম খেতে শুরু করুন, কারণ এটি আপনাকে বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করতে পারে! চিনাবাদামে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোলাজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। কোলাজেন ত্বকের দৃঢ়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে বলিরেখা এবং বিবর্ণতা প্রতিরোধ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
চিনাবাদাম পলিফেনলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, এটি মূলত পি-কৌমারিক অ্যাসিড, যা পাকস্থলীতে কার্সিনোজেনিক নাইট্রোসামাইন গঠনকে সীমিত করে পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। চিনাবাদাম রেসভেরাট্রোলের একটি চমৎকার উৎস, যা ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক কাজ করে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
চিনাবাদামে পাওয়া রেসভেরাট্রল রক্তনালীতে আণবিক প্রক্রিয়া পরিবর্তন করে এবং একটি ভাসোডিলেটর হরমোন নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন বাড়িয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় বলে মনে করা হয়। চিনাবাদাম রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারে। উপকারী প্রভাবের জন্য প্রতিদিন এক মুঠো চিনাবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিষণ্ণতা দূর করে
চিনাবাদাম একটি উপকারী নাস্তা, কারণ এটি সত্যিই মন খারাপকে দূরে ঠেলে দিতে পারে! চিনাবাদামে থাকা ট্রিপটোফ্যান সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা বিষণ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। কম সেরোটোনিন মাত্রা বিষণ্ণতা সৃষ্টি করে। তাই মন ভালো রাখতে এখন থেকে নাস্তায় এক মুঠো করে চিনাবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
মন্তব্য করুন