বাংলায় প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত মেয়েদের একমাত্র পরিধেয় ছিল শাড়িই। তখন মেয়েদের পোশাক ছিল এক পরতের থান কাপড়। সাটি বা সারঙ্গ ছিল শাড়ির আদি নাম। হাতের মাপ হিসেবে শাড়ির সাধারণ মাপ ছিল বারো হাত। এই দীর্ঘ কাপড়ই কালক্রমে শাড়িতে পরিণত হয়েছে।
১০০ বছরেরও কম সময় আগে বাঙালি সাধারণ নারীরা শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ বা পেটিকোট পরতো না। অভিজাত নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য সেটি ভিন্ন ছিল। ব্রিটিশ শাসনের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে এসে অভিজাত নারীদের শাড়ির সাথে, ফুল-হাতা গলাবন্ধ ব্লাউজ পরতে দেখা যেত।
পাহাড়ি পোশাক সমতলে এসে পেয়েছে নিজস্ব আলাদা সত্তা তাই বর্তমানে থামির কাপড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে শাড়িতে। মণিপুরি শাড়ি অনেকদিন থেকেই ফ্যাশনে বেশ ট্রেন্ডি। তার সঙ্গে থামির শাড়িও। আদিবাসী পোশাক থামির নকশা এখন ব্যবহার হচ্ছে সাধারণ তাঁতের শাড়িতেও। কুঁচিতে থাকছে থামির নিচের অংশের ডিজাইন ও নকশা আর আঁচলে ব্যবহার হচ্ছে থামির ওড়নার অংশের মোটিফ।
বাঙালি নারীরা বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে শাড়ি পরলেও আগের চেয়ে শাড়ির প্রচলন বেশ কমে এসেছে । বর্তমানে নারীরা সবচেয়ে বেশি পরেছে সালোয়ার-কামিজ। তাছাড়াও আরামদায়ক পোশাক হিসেবে, ঘরে-বাইরে
বর্তমানে বাঙালি নারীরা বিভিন্ন পশ্চিমা পোশাক পরছেন।
বর্তমান সময়ে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নারী উদোক্তাগন, দেশীয় সুতি শাড়িতে তাদের নিজস্ব বাঙ্গালিয়ানার কারুকাজ গুলো করছেন যেমন- আমাদের দেশীয় ফুল, পাখি আর প্রাকৃতিক দৃশ্য পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে দেশীয় কাপড়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এমনকি, উদ্যোক্তারা গ্রাহকের পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী রং-তুলি দিয়ে এক একটি শাড়িকে এক একটি নতুন শিল্প হিসেবে তুলে ধরছেন।
আধুনিকতার এতো পরিক্রমার পরেও বাঙালি নারীর পোশাক হিসেবে শাড়ি ধরে রখেছে বাঙালির ঐতিহ্য। জিন্স-টপসে নারী যতই আধুনিকা হোক না কেন, বাঙালি নারী মানেই পরনে শাড়ি। সত্যি বলতে, একজন বাঙালি নারীকে শাড়িতে যতটা স্নিগ্ধ আর সাবলীল সুন্দর লাগে, অন্য পোশাকে ততোটা কখনোই লাগে না। “বাঙালিয়ানা” ও বাঙালি নারীর “শাড়ি” একে-অপরের সাথে আগেও ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল এবং আশা করা যায় আগামীতেও থাকবে।
মন্তব্য করুন