সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারে আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে তিনি পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যারিস্টার সুমন লিখেন, ‘আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই’।
এর আগে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, প্রথমেই জানাতে চাই আমি দেশেই রয়েছি। ঢাকা শহরেই আছি। ৫ আগস্টের পর আমি কোথাও যায়নি। শুধুমাত্র নিরাপত্তার কারণে আমি গোপনে ছিলাম। ৫ আগস্টের পর অনেকেই আমাকে বলেছেন যে তুমি বিদেশে চলে যাও। কিন্তু আমি যাইনি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমি কোনো দিন দুর্নীতি করিনি। ঢাকা শহরে আমার কোনো প্লট ও ফ্লাট নেই। তারপরও কেন আমি দেশ ছেড়ে যাব।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমার নামে যদি কোনো মামলা হয়ে থাকে তাহলে তা আইনের মাধ্যমে মোকাবিলা করব। যেহেতু আমি আইনজীবী, আইনের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
এরপর গত ২০ আগস্ট অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিওবার্তায় দুঃখ প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সুমন। ওই সময় ভিডিওতে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি। তিনি দাবি করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলেন।
এর আগে ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, আমি সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য এখানে আসিনি। এখন ফেসবুকটা এমন অবস্থা, আমাকে তো প্রধানমন্ত্রী ফেসবুক এমপি বলতেন। আমি ফেসবুক এমপি হিসেবে থাকতাম এবং সরকারের বিরুদ্ধে আজকে একটা কথা বললে কালকে বলবেন সুমনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। আমি তো ওই প্রধানমন্ত্রী হতে এখানে আসিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, আমার রাইট, রঙ সব বোঝার ক্ষমতা আছে। আমি পড়াশোনা করে ব্যারিস্টার হয়েছি। আপনারা বলতে পারেন, আপনার পড়াশোনার মান খুবই খারাপ। কিন্তু এটা আপনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই? আপনারা প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করাতে চান, কিন্তু আপনাদের আন্দোলন তো পুরোটাই জামায়াত-বিএনপির হাতে চলে গেছে। তাইলে আপনারা জামায়াতকে আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন, তারেককে ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন। তিনি তো দণ্ডপ্রাপ্ত।
এক দফার সমালোচনা করে সুমন আরও বলেছিলেন, আজকে আপনারা একদফা চাচ্ছেন। আপনাদের একদফা কি? মনে করেন আপনাদের একদফা আমি মেনে নিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে আপনি পদত্যাগ করেন। ছাত্ররা মারা যাচ্ছে। স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে আমি তাকে বললাম। আজ যা একদফা দিচ্ছেন, কালকে তারা আরেকটি দফা দিয়ে বললেন, আপনি আওয়ামী লীগ করা বন্ধ করেন। এ দেশে কেউ আওয়ামী লীগ করতে পারবেন না। দুদিন পরে বলবে এ দেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকবে না। এদের একটার পর একটা দফা সারেন্ডার করে মেনে নেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়। আমরা তো সংঘত চাই না। আমি একটা প্রাণহানিরও পক্ষে না।
মন্তব্য করুন