সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩২

কান ভালো রাখতে ডিভাইস বানালো ভারত

আইটি ডেস্ক
  ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪১

কান খুবই সংবেদনশীল। অথচ কানের যত্ন নিয়ে সচেতনতা অনেকটাই কম। কানের যে কোনও সমস্যাকে অবহেলা করলে তা বধিরতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। কানের সমস্যা নানা রকম হতে পারে। তবে এর মধ্যে একটি সমস্যা নিয়ে চর্চাই বেশি হচ্ছে। সেটি হল ‘টিন্নিটাস’। 

সর্ব ক্ষণ কানে কোনও কিছু আওয়াজ শুনতে পাওয়া, কানের ভিতর একটানা ঝিঁ ঝিঁ-র ডাক, কখনও জোরে গর্জন শুনতে পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয় এই রোগে। শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও, এই সমস্যার শিকড় লুকিয়ে রয়েছে অনেক গভীরে। 

এই রোগ সহজে সারে না এবং বাড়াবাড়ি হলে অনিদ্রা, শরীরের ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়া, শ্রবণশক্তি একেবারে কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য নতুন এক রকম যন্ত্র তৈরির দাবি করেছে মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (বম্বে আইআইটি)।

‘জামা নিউরোলজি’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। বম্বে আইআইটির গবেষক দল দাবি করেছে, বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৭৪ কোটি মানুষ কানের এই রোগে ভুগছেন, যার মধ্যে ১ কোটির বেশির ভয়ঙ্কর রকম সব উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ‘টিন্নিটাস’ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছে পুরোপুরি বধির হয়ে গিয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

‘টিন্নিটাস’ নানা করণে হতে পারে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বয়সজনিত কারণে শ্রবণশক্তি কমে গিয়ে এই রোগ হতে পারে, ভাইরাস সংক্রমণে হতে পারে, কানে জোরে আঘাত লাগার কারণেও হতে পারে। এই রোগ হলে, সারা ক্ষণ কান ভোঁ-ভোঁ করতে থাকে। রোগীর মনে হয়, দূরে কোথাও শঙ্খ বা ঘণ্টা বাজছে অথবা বাজ পড়ার মতো শব্দ হচ্ছে। 

খুব জোরে বোমা ফাটলে যেমন শব্দ হয়, তেমনও শুনতে থাকেন অনেকে। আবার রোগীরা এমনও বলেছেন যে, সারা ক্ষণ মনে হয় কানে কেউ ফিসফিস করে কথা বলছে। ঘুমোনোর সময়েও এই সমস্যা হতে থাকে। টিন্নিটাসের কারণে অনিদ্রার সমস্যাও দেখা দেয়। রোগী অবসাদ, উদ্বেগে ভুগতে পারেন।

মস্তিষ্কের সঙ্গে মুখের পেশির সংযোগ থাকে ফেশিয়াল নার্ভের মাধ্যমে, যে নার্ভের গতিপথ পুরো কানের ভিতর দিয়ে। এই নার্ভের জন্য মুখ নাড়ানো, চোখ বন্ধ করা-খোলা— এমন কাজগুলো করা যায়। টিন্নিটাসে আক্রান্ত হলে তখন ফেশিয়াল নার্ভের ক্ষতি হয়, যে কারণে রোগীর ‘ফেশিয়াল প্যারালিসিস’ হতে পারে। রোগ বেড়ে গেলে তখন মাথা ঘোরা, বমি ভাব সারা ক্ষণই থাকবে।

টিন্নিটাস সহজে চিহ্নিত করা যায় না। আইআইটির গবেষকদের দাবি, তাঁদের তৈরি যন্ত্র কানে লাগালে রোগটি নির্ণয় করা সম্ভব। কেবল তা-ই নয়, যন্ত্রের সঙ্গে বিশেষ সফট্‌অয়্যারেরও সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে। ফোনে বা কোনও ডিভাইসে সেই সফট্‌অয়্যারটি ইনস্টল করে নিলে রোগীর কানের ভিতর কী কী হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণে রাখা যাবে। 

কী থেকে রোগটি হয়েছে তা যেমন চিহ্নিত করা যাবে, তেমনই রোগটি সারানোর উপায়ও নাকি বার করা যাবে। যন্ত্রটি গবেষণার স্তরে রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, পরীক্ষানিরীক্ষার পরে যদি দেখা যায় যন্ত্রটির সঠিক ভাবে কাজ করছে, তা হলে বধিরতার ঝুঁকি থেকে অনেককে বাঁচানো যাবে।

মন্তব্য করুন