অচেনা নম্বর থেকে বার বার ফোন আসে? হোয়াটসঅ্যাপেও অডিও বা ভিডিও কলের জ্বালায় অস্থির? ভুলেও এই ধরনের ফোন ধরবেন না।
অথবা হোয়াটসঅ্যাপে কোনো অজানা নম্বর থেকে অডিও বা ভিডিও কল এলে তা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। কারণ মুহূর্তের অসতর্কতায় নিমেষে ফাঁকা হয়ে যেতে পারে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এখন মনে হতেই পারে, মিসড কল থেকে কী বিপদ হতে পারে?
এই বিষয়ে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায় চৌধুরী বলছেন, সাইবার জালিয়াতির নতুন নতুন পদ্ধতি বের করছে অপরাধীরা। ফোনে মিসড কল দিয়ে সেই ব্যক্তির সিম ও ফোনের যাবতীয় তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ করছে।
যদি ফোনটি রিসিভ করা হয় অথবা অপর প্রান্তের ব্যক্তির কথায় ভুলে জরুরি তথ্য কেউ দিয়ে দেন, তা হলেই সর্বনাশ! জালিয়াতির এই পদ্ধতির নাম ‘সিম সোয়্যাপ স্ক্যাম’।
সাইবার অপরাধীরা যাদের নিশানা বানাচ্ছে, তাদের সিম কার্ড ও ফোনের জাল নথি বানিয়ে টেলিকম অপারেটরের থেকে ফোনের নিয়ন্ত্রণ হাতিয়ে নিচ্ছে। আপনারই নম্বর থেকে ফোন করে অপারেটরকে বলছে, সিম কার্ড ব্লক করে দিতে।
আসল সিম ব্লক হয়ে যাওয়ার পরে জাল সিম কার্ড ব্যবহার করে ফোনের যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। অর্থাৎ সিম অদলবদল করে নিচ্ছে আপনারই অজান্তে।
এই সিম অদলবদলের কারণে কী হতে পারে? রাজর্ষি বলছেন, আপনি হয়ত দেখলেন, হঠাৎ করেই ফোন ব্লক হয়ে গিয়েছে। অথবা আপনার ফোনের সমস্ত অ্যাপ, জিমেল, ইব্যাংকিংয়ের ওপর আপনার আর নিয়ন্ত্রণ নেই। তখন ফোনে ওটিপি এলে, তা সরাসরি অপরাধীদের কাছে চলে যাবে।
অনেক সময়ে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে অপরাধীরা নিজেদের ব্যাংকের অফিসার অথবা সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে আধারের তথ্য অথবা প্যান, ব্যাংকের খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করে। মেসেজ পাঠিয়েও তা জানার চেষ্টা হয়। ভুল করেও সেই ফাঁদে পা দিলে আপনার ফোনের ওপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ কায়েম করবে সাইবার জালিয়াতেরা।
কী ভাবে সাবধান থাকবেন?
১) যদি কেউ আপনার কাছে টেলিকম কোম্পানি বা ব্যাঙ্কের নামে ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায়, তা হলে তা জানাবেন না।
২) অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ এলে বা কোনো লিঙ্ক পাঠানো হলে তা খুলে দেখবেন না বা উত্তর দেবেন না।
৩) বার বার অজানা নম্বর থেকে ফোন এলে সতর্ক থাকুন। দরকারে পুলিশের সাইবার সেলে যোগাযোগ করুন।
৪) যদি কেউ ফোন করে নিজেদের ব্যাংকের কর্মচারী বলে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড, অথবা আপনার অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে কিছু জানতে চান, তা হলে সর্বাগ্রে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিন।
৫) অপরিচিত কাউকে নিজের আধার, প্যানের তথ্য দেবেন না। এমনকি, মেল আইডি, বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল সংক্রান্ত কোনো তথ্যও বলবেন না।
৬) ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ ব্যবহার করতেই হবে অথবা গুগ্ল অথেন্টিকেটর ব্যবহার করে অ্যাপগুলি সুরক্ষিত রাখতে হবে।
৭)আপনার টেলিকম অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফোনের জন্য আলাদা পিন বা পাসওয়ার্ড সেট করে রাখুন। এতে অন্য কেউ আপনার ফোনটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না বা সিম ব্লক করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন