বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কম্পিউটার-এইডেড ড্রাগ ডিজাইন এন্ড ডিসকভারী বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

দেশ টিভি ডেস্ক
  ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৪:০০

হেলথ মেড সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের আয়োজনে “কম্পিউটার-এইডেড ড্রাগ-ডিজাইন এন্ড ডিসকভারী” বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাত দিন ব্যাপি এই কর্মশালায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষক ও শিক্ষার্থীরা  অংশগ্রহণ করেন। 

“মলিকুলার ডকিং,  ডাইনামিক্স, কম্পিউটার এইডেড ড্রাগ ডিজাইন এন্ড বায়োইনফরমেটিক্স” শিরোনামে সাতদিন ব্যাপি কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণটি ১৬ ই নভেম্বর থেকে শুরু করে ২৪ শে নভেম্বর অনলাইন জুম প্ল্যাটফর্ম এবং  হ্যান্ডস-অন-ট্রেনিং সেশন উভয় মাধ্যমে  পরিচালিত হয়। গত ২৪শে নভেম্বর এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ, লালমাটিয়া, ঢাকা -এর সেমিনার হলে দিনব্যাপী হ্যান্ডস-অন-প্রশিক্ষণ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। 
  
কম্পিউটার-এইডেড ড্রাগ ডিজাইন, কম্পিউটেশনাল কেমিষ্ট্রি ও বায়োইনফরমেটিক্স বিষয়ে তিনজন বিজ্ঞানী ও প্রশিক্ষক অজয় কুমার (সিনিয়র লেকচারার, রসায়ন বিভাগ, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ), ড. শাবানা বিবি (সহকারী অধ্যাপক, বায়োসায়েন্সেস বিভাগ, শিফা তামির-ই-মিল্লাত বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তান) এবং জনাব আব্দুস সামাদ (প্রতিষ্ঠাতা ও সিনিয়র গবেষক, কম্পিউটেশনাল বায়োলজি ল্যাবরেটরি, বায়োসোল সেন্টার, বাংলাদেশ) কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

 এই কর্মশালায় ড্রাগ ডিজাইনের ব্যাসিক লেভেল থেকে শুরু করে এডভান্সড লেভেল পর্যন্ত হ্যান্ডস অন ট্রেনিং করানো হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কম্পিউটারের বায়োলজিক্যাল ডাটাবেইজ ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যাবহার করে কিভাবে একটি নতুন ওষুধের অনু বাছাই করা  যায়, কিভাবে সেই অণুটিকে সম্ভাব্য ওষুধ হিসেবে ডিজাইন করা যায়, শরীরের ভেতরে ওষুধটির সম্ভাব্য ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, প্রোটিন তথা রিসিপটরের সাথে নতুন ড্রাগটির সম্ভাব্য বাইন্ডিং এফিনিটি, শরীরের ভেতরে তার স্থায়ীত্ব, সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বিষক্রিয়া, শরীরের ভেতর থেকে কতক্ষন বা কতদিন পর ওষুধটি সম্পূর্ণভাবে বের হয়ে যাবে, এবং নতুন ওষুধ হিসেবে তার কার্যকারিতার মাত্রা ইত্যাদি নানা বিষয়ে তাত্বিক  জ্ঞান ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ইউনিভার্সিটি অফ ব্যাবিলনের (ইরাক) প্রফেসর  ড. হোসাইন বলেন, “মূল্যবান তথ্য ও নিরন্তর সহযোগিতার জন্য আমি কর্মশালার আয়োজক হেলথ মেড সাইন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের সকলের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি এই কর্মশালা থেকে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছি  এবং  অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. জাকেরুল আবেদীন বলেন, এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের গবেষণা কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজনের জন্য হেলথ মেড সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে সবসময়  উৎসাহিত করে। 

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ আমরান তার বক্তৃতায় অংশগ্রহণকারীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনে সাফল্য অর্জনের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। 

হেলথ মেড সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের প্রতিসষ্ঠাতা ড. মোঃ মোকলেছুর রহমান সরকার বলেন, ভারত, চীন, হংকং, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে গবেষণালব্ধ পরিপূরক ও বিকল্প ওষুধ যেমন নিউট্রাসিউটিক্যালস এবং হার্বাল ওষুধের অনুমোদনের নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং সুবিধাজনক। কিন্তু বাংলাদেশে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের রেগুলেটরি প্রক্রিয়া নতুন গবেষণা পণ্য অনুমোদনের অনুমতি দেয় না, যদি না সেগুলো আমেরিকা, ইউরোপসহ উন্নত দেশে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

উদাহরনস্বরূপ ড. মোকলেছুর রহমান বলেন, ভারত ও চীন কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য গবেষণার ভিত্তিতে শত শত প্রাকৃতিক ওষুধ পেটেণ্ট করেছে এবং অনুমোদন দিয়েছে এবং সেগুলো জনগণ ব্যবহার করছে কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের চিকিৎসার জন্য একটিও পণ্য অনুমোদন করা হয়নি বা অনুমোদনের জন্য রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে । এটা গবেষকদের জন্য এবং জাতির জন্যও খুবই হতাশাজনক।

তিনি আরও বলেন, ভারত ও চীনের নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশেও গবেষনালব্ধ নতুন বিকল্প ওষুধের অনুমোদনের নিয়ম-কানুন পরিবর্তন করে গবেষণা লব্ধ গুরুত্বপূর্ণ হারবাল ওষুধের নতুন ফর্মুলা অনুমোদন দিলে দেশ উপকৃত হবে, গবেষকরা উৎসাহিত হবে। 

সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ফার্মেসি বিভাগের হেড অব একাডেমিক এন্ড  রিসার্চ অ্যাফেয়ার্স এবং  হেলথ মেড সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের প্রতিসষ্ঠাতা প্রফেসর  ড. মোঃ মোকলেছুর রহমান সরকার।  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. জাকেরুল আবেদীন এবং বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাহ আমরান।


প্রশিক্ষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ ব্যাবিলন (ইরাক), এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (পাকিস্তান) এর বেশ কয়েকজন গবেষক, ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

মন্তব্য করুন