মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিওকে পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে আমেরিকার প্রথম লাতিনো শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে নিযুক্ত হবেন ফ্লোরিডায় জন্ম নেয়া এই রাজনীতিবিদ।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের খবরে জানা গেছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য ট্রাম্পের শর্টলিস্টে থাকা রুবিও সম্ভবত সবচেয়ে যুদ্ধানুকূল মনোভাবাপন্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। বিগত কয়েক বছরে চীন, ইরান এবং কিউবাসহ আমেরিকার ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে কথা বলেছেন তিনি।
যদিও সর্বদাই রূপ পরিবর্তনকারী হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প শেষ মুহূর্তে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন। তবুও সোমবার (১২নভেম্বর) পর্যন্ত তিনি তার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রুবিওকে স্থির করেছেন বলে মনে হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছে সূত্র । তবে এ বিষয়ে ট্রাম্প ও রুবিওর প্রতিনিধিরা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।
নতুন প্রশাসন আগের চেয়ে আরও অস্থির এবং বিপজ্জনক বিশ্ব পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। কারণ ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ চলছে এবং চীন রাশিয়া ও ইরানের মতো মার্কিন শত্রুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে। ইউক্রেনের সংকট রুবিওর এজেন্ডায় শীর্ষস্থানে থাকবে।
ট্রাম্পের কিছু সমর্থক অবশ্য তার সিদ্ধান্তে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কারণ রুবিও বরাবর এমন শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে ছিলেন যা ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সাংঘর্ষিক। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রুবিও কিছু ক্ষেত্রে তার অবস্থান নরম করেছেন, যাতে তা ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টদের আমেরিকাকে ব্যয়বহুল ও অকার্যকর যুদ্ধে নিপতিত করার জন্য দোষারোপ করেছেন ট্রাম্প এবং একটি সংযত পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে মত দিয়েছেন।
রুবিও সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানো। পূর্বে দখলকৃত ইউক্রেনের সব ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের প্রতি মনোযোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিযেছেন তিনি। তিনি ইউক্রেনের জন্য এপ্রিল মাসে পাস হওয়া ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া ১৫ জন রিপাবলিকান সিনেটরের একজন ছিলেন।
সিনেটে শীর্ষ চীন-বিরোধী হিসেবে পরিচিত রুবিও। সেনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য হিসেবে তিনি বাইডেন প্রশাসনের ওপর চাপ বজায় রেখেছিলেন। এই বছরের শুরুর দিকে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের সব বিক্রয় বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।
রুবিওর দাদা ১৯৬২ সালে কিউবা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। কিউবা সরকারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের ঘের বিরোধী ছিলেন তিনি। ট্রাম্পও একই মনোভাব পোষণ করেন।
লাতিন আমেরিকার বিষয়ে নজরদারিকারী হাউসের উপকমিটির প্রধান হিসেবে ভেনিজুয়েলার নিকোলাস মাদুরো সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রুবিও।
মন্তব্য করুন