শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসের মসনদে ফিরলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৪০
ছবি-সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয় বারের মতো দোর্দণ্ড প্রতাপে হোয়াইট হাউসের মসনদে ফিরলেন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

নির্বাচনের আগের জনমত জরিপের সব হিসেব-নিকাশ উল্টে দিয়ে মঙ্গলবার মার্কিনিরা আরেকবার বেছে নিলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে। এর মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর কমলা হ্যারিসের উত্থানের আশায় গুঁড়েবালি দেখল বিশ্ব; আর শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশটিতে নতুন ইতিহাস গড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি এমন কীর্তি গড়েছেন, যা তার আগে সম্ভব করতে পেরেছিলেন মাত্র একজন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পই দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনে গিয়ে পরাজিত হওয়ার পর ফের নির্বাচনে লড়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয় পেয়েছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র একজনের ঝুলিতেই ছিলো এমন কৃতিত্ব। তার নাম গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ক্লিভল্যান্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনে গিয়ে পরাজিত হওয়ার পর ফের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন।

এ বিষয়ে উইলিয়াম পিটারসন ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক লুইস পিকোনে বলেন, গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইজনই অনন্য। এই দুই সাবেক প্রেসিডেন্টই, পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে পরাজিত হওয়ার পরও, ফের বিজয়ী হয়েছেন।

তবে সাফল্য না পেলেও আমেরিকার ইতিহাসে আরও বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্টও, পরাজিত হওয়ার পরও ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে ট্রাম্প বা ক্লিভল্যান্ডের মতো ভাগ্য সহায় হয়নি তাদের।

সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে মার্টিন ভ্যান বুরেন ১৮৪৪ এবং ১৮৪৮ সালে এবং মিলার্ড ফিলমোর ১৮৫৬ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণ করলেও জয়লাভে অসমর্থ হন তারা। তবে এই দুইজনই অবশ্য তাদের সময়ে খুব একটা জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন না। 

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়া সত্ত্বেও একই চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছিলেন ইউলিসেস এস গ্রান্ট, টেডি রুজভেল্ট। ইউলিসেস গ্রান্ট ১৮৮০ সালে এবং ১৯১২ সালে টেডি রুজভেল্ট এই চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হন।

তবে ট্রাম্পের আগে শুধুমাত্র ক্লিভল্যান্ডই এই অসাধ্য সাধনে সমর্থ হন এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরাজিত হয়েও ফের হোয়াইট হাউজ পুনরুদ্ধারে সমর্থ হন। নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট রাজনীতিক গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ১৮৮৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হলেও ১৮৮৮ সালের নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে বেনজামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান। অবশ্য জনপ্রিয় (পপুলার) ভোটে তিনিই বিজয়ী হয়েছিলেন।

তবে হেরে গেলেও দমে যাননি ক্লিভল্যান্ড, ১৮৯২ সালের নির্বাচনে বেনজামিন হ্যারিসনকে হারিয়েই ফের হোয়াইট হাউজ দখল করেন তিনি।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে রাজনৈতিক জীবনে ফিরে এসে অন্যান্য পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন ইতিহাসও রয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে জেমস ম্যাডিসন এবং জেমস মুনরো উভয়ই ১৮২৯-১৮৩০ সালের ভার্জিনিয়ার কনস্টিটিউশনাল কনভেনশনে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে পরবর্তীতে কংগ্রেস নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হওয়ার রেকর্ড রয়েছে শুধুমাত্র জন কুইনসি অ্যাডামের। অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের কাছে পরাজিত হওয়ার দুই বছর পর তিনি মার্কিন কংগ্রেসে নির্বাচন করেন এবং নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে ১৮৩১ থেকে ১৮৪৮ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

অন্যদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনেরও অবশ্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর মার্কিন পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার রেকর্ড রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ১৮৬৮ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইমপিচমেন্টের শিকার হওয়ার পরও ১৮৭৫ সালে নিজ রাজ্য টেনেসি থেকে সিনেট নির্বাচনে জয়লাভ করেন অ্যান্ড্রু জনসন।

মন্তব্য করুন