আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে পুরো বিশ্বেরই আলাদা নজর থাকে। কোথায় কী প্রভাব পড়তে পারে- এ নিয়েও শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। এ বছরও এর ব্যতীক্রম নয়। তবে বাংলাদেশে এবার একটু বেশিই হিসেব-নিকাশ শুরু হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় ক্ষমতায় এসেছে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। এমন সময়ে মার্কিন সরকারের পরিবর্তনের প্রভাব কতটা পড়তে পারে বাংলাদেশে- এমন প্রশ্ন জনমনে।
চূড়ান্ত ফল ঘোষণা না হলেও এরই মধ্যে ডোনাল্ট ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হয়েছে। ট্রাম্পের জয়ে কী প্রভাব পড়বে- এমন প্রশ্নে বিশেষজ্ঞদের মত হলো- বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক গণযোগাযোগ টিম ও লবিস্ট নিয়োগ করার পরামর্শ তাদের। নতুবা হিন্দুস্তানের মিথ্যাচারের কারণে বাংলাদেশ সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। এমনকি এর ফলে বেহাত হতে পারে বিপ্লব।
বিবেচনায় আসছে কয়েকদিন আগে ট্রাম্পের করা পোস্ট। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ করা পোস্টে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘চরম বিশৃঙ্খল’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও দেশীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি ছিল ডোনাল্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী কৌশল।
হিন্দুদের ভোট টানতেই তিনি এমন মন্তব্য করেছিলেন। তাছাড়া অভিযোগটিও সত্য নেই। অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের এবং আরো স্পষ্টভাবে বললে নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। অতএব বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব বাড়বে। স্বভাবতই ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে হবে।
আবার অনেকের মতে, প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের খুব ভালো সম্পর্ক। প্রধান উপদেষ্টার বন্ধু দুটি দলের মধ্যেই আছেন। সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর। ড. ইউনূস একজন গ্লোবাল লিডার। ফলে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে মত দেন তারা। তারা বলেন- আমেরিকা সাধারণত তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করে না। বাংলাদেশের প্রতিও তেমন কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন প্রশাসন শুরু থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে সরব ও সক্রিয় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারতের দৃষ্টিতে দেখে না। শেখ হাসিনার সরকারের শেষ সময়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন ছিল। সেটি যদি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছিল বলে মনে হয় না।
মন্তব্য করুন