অভিযোগ, হামাস-ইজ়রায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদি পড়ুয়াদের উপরে নানা ধরনের হামলা চলছে। তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। এবং পরিস্থিতি নিয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
‘শাস্তিস্বরূপ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের জন্য বরাদ্দ ৪০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য ছাঁটার সিদ্ধান্ত নিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। একটি বিবৃতি দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘ইহুদি পড়ুয়াদের টানা হেনস্থা হওয়া এবং তা আটকাতে কোনও রকম পদক্ষেপ না করার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’
গাজ়ার যুদ্ধে আমেরিকার অর্থ ও অস্ত্রসাহায্য করার প্রতিবাদে গত বছর তীব্র আন্দোলন শুরু হয় আমেরিকার। নিউ ইয়র্কের কলেজগুলি ছিল সেই আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। সেই সময়েও এই আন্দোলন গায়ের জোরে প্রতিহত করা হয়। জো বাইডেন সরকারের সেনাবাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে।
আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্ষোভস্থাল থেকে। এই একটি বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে ‘সহমত’ প্রদর্শন করেছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, স্কুল-কলেজ ক্যাম্পাসে এ ধরনের ‘বেআইনি আন্দোলন’ চললে, অর্থসাহায্য সম্পূর্ণ ভাবে দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার পরেই আজকের এই ঘোষণা।
শিক্ষা সচিব লিন্ডা ম্যাকমোহন-ও বলেছেন, দিনের পর দিন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন ইহুদি পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ছাত্রছাত্রীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, ইহুদি-বিদ্বেষী মন্তব্য করা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ঘটনা ‘উপেক্ষা’ করে যাচ্ছেন। লিন্ডা বলেন, ‘‘কলম্বিয়া ও অন্য সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা আমরা কোনও ভাবেই সহ্য করব না।’’
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, তারা সরকারি ঘোষণাপত্রটি পর্যালোচনা করে দেখছে। সরকারি অর্থসাহায্য যাতে বন্ধ না হয়, সেটা মাথায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের কাছে একটি ইমেল এসে পৌঁছেছে।
প্রেরক কলম্বিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ক্যাটরিনা আর্মস্ট্রং। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বড় বিপদের সম্মুখীন। তবে এই আশ্বাস দিচ্ছি, সরকার অর্থসাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দিলে এখনই গবেষণা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির ক্ষতি হবে না। তেমন কোনও আশঙ্কা নেই।’’
মন্তব্য করুন