যুক্তরাজ্যে লন্ডন, লিভারপুল ও বার্মিংহাম শহরে অভিবাসীদের পক্ষে ও অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন লাখো মানুষ। অতি ডানপন্থিদের অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভের প্রতিবাদ করেন তারা। স্লোগান দেন অভিবাসী ও শরণার্থীদের পক্ষে।
যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরো মিছিলের ডাক দিয়েছে অতি ডানপন্থিরা। তার প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন হাজার হাজার মানুষ। তারা বর্ণবাদ-বিরোধী স্লোগান দেন।
পুলিশ বলছে, জনতার ‘আ শো অফ ইউনিটি’ বা একতার প্রদর্শন যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক দাঙ্গা বন্ধ করতে সহযোগিতা করেছে।
লন্ডনের মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, শহরে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল৷ তাছাড়া সম্ভাব্য হামলা সামলাবার জন্য এক হাজার তিনশ বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে রাখা হয়েছে।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান কমিশনার মার্ক রাউলি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘পুলিশের শক্তি প্রয়োগ এবং পরিষ্কারভাবে জনতার একতার প্রদর্শনের মাধ্যমে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো উৎড়ে গেছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘গত রাতে তা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং অতি ডানপন্থিদের প্রতি ভয় কমে গেছে।’’
‘শরণার্থীরা স্বাগত’ এবং ‘বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লন্ডন’
বুধবার সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামেন। তাদের হাতে ছিল পোস্টার, সেখানে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছাড়াও অভিবাসী, শরণার্থী ও যারা আশ্রয় নিতে চান, তাদের স্বাগত জানাবার কথাও বলা হয়েছিল।
লন্ডন ছাড়াও বার্মিংহাম, লিভারপুল, শেফিল্ড, ব্রিস্টলেও প্রচুর মানুষ রাস্তায় নেমে মিছিল করেছেন।
মানুষ ঢোল বাজিয়ে লন্ডনে ‘শরণার্থীরা স্বাগত’ এবং ‘বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লন্ডন’ স্লোগান দেন।
পূর্ব লন্ডনের ওয়ালথামস্টো এলাকায় একটি অভিবাসন কেন্দ্রের বাইরে বিশাল সমাবেশ হয়৷ সেখানে একজন চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘ফ্যাসিবাদী চলে গেছে’৷ সঙ্গে সমবেতরা অন্য শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
তারা ‘অতি ডানপন্থা থামান’, ‘অভিবাসন কোনো অপরাধ নয়’ এবং ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ফিঞ্চলি’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভকে ‘অতিডান গুন্ডামি’ বলে উল্লেখ করেছেন৷
লন্ডনে উত্তেজনা
গত সপ্তাহে বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর বিশেষ করে লন্ডনে উত্তেজনা ছিল৷ সেখানে ১০০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়৷
লিভারপুল, ব্রিস্টল ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী বেলফাস্টে অস্থিরতার পরে যুক্তরাজ্যের অন্যান্য জায়াগায় আরও শতাধিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান বলেছেন, বুধবার পুলিশ অভিবাসন আইনজীবী ও পরিষেবাগুলোকে বিশেষ সুরক্ষা দিয়েছে৷
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা
ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তিন নারীর হত্যা সম্পর্কে গুজব ছড়ানোর পর সপ্তাহব্যাপী যে সামাজিক অস্থিরতা দেখা গেছে, তা দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে অভিবাসী এবং একজন মুসলিম হিসেবে প্রচার করা হয়।
দাঙ্গাকারীরা তখন অভিবাসন বিরোধী স্লোগান দেয়, মসজিদে হামলা চালায় এবং অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দেয়া হোটেলে ভাঙচুর করে৷ মুসলিম ও অভিবাসীরা এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
মন্তব্য করুন