নির্বাচনের আগে বড়সড় বিপাকে পড়লেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ভোটের আগে তার দলের ৭৮ জন এমপি জানিয়ে দিয়েছেন, তারা আগামী নির্বাচনে লড়বেন না। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যেই দাবি উঠছিল, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হোক।
কারণ গত কয়েক মাসে দলটির নেতাদের প্রতি ভোটারদের আস্থা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। একের পর এক জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটিশ রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল করতে পারে কনজারভেটিভ পার্টি। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে হার অবধারিত বলেই মত দলের একটি বড় অংশের।
কিন্তু দলের মত কার্যত উড়িয়ে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ঋষি সুনাক। জানিয়েছেন, আগামী ৪ জুলাই হবে দেশটির সাধারণ নির্বাচন। সেখানে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি। দলীয় মতের ‘বিরোধিতা’ করে দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণায় তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ বেছে নেওয়ার সময় এসেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তার নেতৃত্বেই আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি পাবে দেশ।
তবে নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক কনজারভেটিভ এমপি জানিয়ে দেন, আসন্ন নির্বাচনে তারা লড়তে চান না। এই তালিকায় রয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস, সাবেক চ্যান্সেলর নাদিম জাহাউই ও সাজিদ জাভিদের মতো নেতারা।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, সাধারণ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো টোরি এমপিদের সংখ্যা ১৯৯৭ সালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সেবারের নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছিল স্যার টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কনজারভেটিভ পার্টির নামি নেতারা ধরেই নিয়েছেন, ভোটে তাদের হার নিশ্চিত। তাই লজ্জা এড়াতে আগে থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
চাপে ঋষি সুনাক
এমন পরিস্থিতিতে অনেকটাই আড়ালে চলে গেছেন ঋষি সুনাক। সপ্তাহান্তে বিরোধীরা যখন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত, তখন নিজের বাসভবনে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেই ক্ষান্ত থাকছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
সূত্রের বরাতে দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম সপ্তাহান্তে ‘অস্বাভাবিক পদক্ষেপ’ নিচ্ছেন ঋষি সুনাক। পাবলিক ইভেন্টের পরিবর্তে এই সময়টা তিনি ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সঙ্গে নির্বাচনী কৌশল নিয়ে আলোচনায়ই ব্যয় করবেন।
মন্তব্য করুন