মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডি আর) কঙ্গোর একটি কারাগার ভেঙে পালানোর সময় নিহত হয়েছেন অন্তত ১২৯ জন কয়েদি। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ২ টার দিকে রাজধানী কিনসাসার মাকালা কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ঘটনা ঘটেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাকুমিন শাবানি লুকু বিহাঙ্গো।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে জ্যাকুমিন বলেন, “এই ১২৯ জনের মধ্যে ২৪ জন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছে, বাকিরা প্রাণ হারিয়েছেন পদদলন ও সাফোকেশনের শিকার হয়ে। কয়েক জন নারী কয়েদি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও আমারা জানতে পেরেছি।”
“এছাড়া (কারাগার থেকে) পালানোর সময় আহত হয়েছেন ৫৯ জন কয়েদি। তাদেরকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।” ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং কিনসাসার বাসিন্দা দাদ্দি সোসো এএফপিকে বলেন সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক ঘণ্টা কারাগারে গুলির আওয়াজ পেছেনে তারা। রাত সাড়ে ৩ টার পর কারাগার থেকে লাশবাহী গাড়িও ছেড়ে যেতে দেখেছেন।
ঘটনার পর মাকালা কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেসব ভিডিওতে মাটিতে কয়েদিদের রক্তাক্ত মরদেহের সারি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ডি আর কঙ্গোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেই ভিডিওতে কারা প্রাচীরের এক জায়গায় একটি বড় গর্ত দেখা গেছে। আরও দেখা গেছে যে কয়েদিদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারা কার্যালয়, খাদ্য ডিপোসহ কারাগার অবকাঠামোর বিভিন্ন স্থাপনা।
এক হাজার পাঁচশ’জন কয়েদি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মাকালা কারাগারে থাকতেন ১২ হাজারেরও বেশি সংখ্যক কয়েদি। এই কয়েদিদের অধিকাংশই বিচারাধীন মামলার আসামি। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের ধরতে ইতোমধ্যে সশস্ত্র এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কঙ্গোর বিচার বিষয়ক মন্ত্রী কনস্ট্যান্ট মুতাম্বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ ঘটনাকে ‘নাশকতা’ উল্লেখ করে বলেছেন, বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মাকালা কারাগারের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
ডি আর কঙ্গোতে কারাগার ভেঙে কয়েদিদের পালানো অবশ্য বিরল কোনো ঘটনা নয়। ২০১৭ সালে এই মাকালা কারাগার ভেঙে ৫০ জন কয়েদি পালিয়েছিল। এরপর ২০২০ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বেনির একটি কারাগার ভেঙে পালিয়েছিল প্রায় ১ হাজার কয়েদি। সূত্র : সিএনএন, এএফপি
মন্তব্য করুন