ভারতে ৫০ শতাংভারতে কম করেও ৫০ শতাংশ পুরুষ ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৩৬ শতাংশের বেশি।
জাতীয় পরিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার সাম্প্রতিক প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, কমবয়সিরাও ভুগছেন এই সমস্যায়। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সিদের প্রতি দশ জনের একজন আক্রান্ত উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়।
আমেরিকার ‘প্লস ওয়ান’ জার্নালে এই সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল অবধি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সমীক্ষাটি করা হয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর), মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন সায়েন্স, মাদ্রাজ ডায়াবিটিস রিসার্চ অর্গানাইজেশন-সহ আরও কয়েকটি গবেষণা সংস্থা এবং সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সমীক্ষাটি চালান।
তাতেই ধরা পড়ে দেশের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৩৫ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপের শিকার। বেশির ভাগেরই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই এবং তার জন্য নিয়মমাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা চিকিৎসাও করান না অনেকেই।শ পুরুষ, ৩০ শতাংশ মহিলা ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপে, সরকারি সমীক্ষায় আর কী জানা গেল?
হাইপারটেনশন নিঃশব্দে হানা দেয় এবং আনুষঙ্গিক আরও নানা ব্যধিকে সঙ্গে নিয়েই আসে। উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে মৃতের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। গত বছরের সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, শহরাঞ্চলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৩.৮ শতাংশ। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিও পিছিয়ে নেই। সেখানেও অন্তত ২৭.৬ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপের শিকার। রক্তচাপ জনিত সমস্যাকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়— এসেনশিয়াল বা প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি।
সমীক্ষা বলছে, এসেনশিয়াল হাইপারটেনশনই বেশি দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয়টির কারণ নিয়ে গবেষণা চলছে। রক্তচাপ ১৪০/৯০ ছাড়ালেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত বলা যায়। যে কোনও সুস্থ ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০।যদি কারও রক্তচাপ ১৪০/৯০-এর বেশি হয়, তখন তার রক্তচাপ বেড়েছে বলা যায়। ভারতে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের অন্যতম কারণই হল অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বাড়তি ওজন কমানো প্রথম কাজ। ওজন বাড়তে শুরু করলে রক্তচাপও একটি পর্যায়ে গিয়ে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে। তখন ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়বে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক ডায়েট করে ওজন কমাতে হবে।
বাইরের খাবার, ভাজাভুজি, বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়াই ভাল। কাজের ফাঁকে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। জিমে যাওয়ার সময় না থাকলে বাড়িতেই শরীরচর্চা করুন। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, স্পট জগিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার বা যে কোনও খেলাধুলো করতে পারলে ভাল হয়।
মন্তব্য করুন