শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিদ্যুতের বকেয়া না পেলে যা করবে ভারতীয় সংস্থাগুলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৮
ছবি- সংগৃহীত

তীব্র গরমের মধ্যে চলছে লোডশেডিং। গ্রামে লোডশেডিং করে ঢাকাসহ বড় শহর সামাল দেওয়ার কৌশলও কাজে আসছে না। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখন প্রতিদিন গড়ে দুই-দিন ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। 

আর ঢাকার বাইরে অবস্থা আরও খারাপ। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বাড়তি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে পাওনাদার ভারতীয় সংস্থাগুলোর তাগাদা। খবর বিবিসির।

ভারতের বেসরকারি সংস্থা ‘আদানি পাওয়ার’ ও আরও কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থার বাংলাদেশের কাছে মোট বকেয়ার পরিমাণ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যেই– আর এই অর্থের কিছুটা অন্তত এখনই পরিশোধ না-করা গেলে সে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনার আমলের শেষ দিক থেকেই বাংলাদেশ চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে, টান পড়েছে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ বা ডলারের ভাঁড়ারেও – অথচ এই বকেয়া পরিশোধ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে খুব দ্রুতই অর্থের সংস্থান করতে হবে।

ভারতের যে সংস্থাটির বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, সেই আদানি পাওয়ার ইতিমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবরে চিঠি লিখে তাদের পাওনা ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ডলার মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তার ‘হস্তক্ষেপ’ চেয়েছে।

আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত তাদের যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করে থাকে, সেখান থেকে সরবরাহ এর মধ্যেই অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত বকেয়া মেটানো নিয়ে কোনও মীমাংসা না-হলে এই পরিমাণ আরও বাড়বে অবধারিতভাবে।

এনটিপিসি-সহ ভারতের আরও বিভিন্ন যে সব রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থার বাংলাদেশের কাছে বিপুল অর্থ পাওনা আছে, তারাও দু-তিন মাস আগে থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানোর পরিমাণ কমাতে শুরু করেছে।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো এখনও ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারকে পেমেন্ট চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘তাগাদা’ দেয়নি – তারা আশা করছে ভারত সরকারই কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে এই সংকটের একটা সমাধান বের করতে পারবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেছেন, এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া মেটানোর জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া না-হলে ভারতীয় কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতেরও দ্বারস্থ হতে পারে। যদিও সেটা একেবারে শেষ ধাপ, এখনও সেরকম পরিস্থিতি আসেনি বলেই তারা জানাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক ব্রোকারেজ ফার্ম ‘বার্নস্টাইন’ও মনে করছে, পাওনা শোধ করা নিয়ে এ সমস্যার জেরে কিছু সময়ের জন্য এই সংস্থাগুলোর হয়তো ‘স্বল্পকালীন’ ভোগান্তি হবে – তবে মধ্যম বা দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে বিষয়টি এখনও উদ্বেগজনক মাত্রা নেয়নি!

এ পটভূমিতেই বুধবার বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, এই খাতের সংকট মেটানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যাংক তাদের ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বলে সরকার আশ্বাস পেয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এ অর্থ হাতে পেলে পাওনাদার সংস্থাগুলোর দাবি হয়তো অনেকটাই মেটানো সম্ভব হবে। তবে এ ঋণের টাকা কখন সরকারের হাতে আসতে পারে বা এটা দিয়ে পাওনাদারদের কাকে কতটা কী মেটানো হবে, তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি।

মন্তব্য করুন