শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২

বিপদ কাটছেই না ভারতীয়দের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৭
ছবি-সংগৃহীত

ভারত বিশ্বের মধ্যে সবথেকে দ্রুত বর্ধনশীল বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১.৪ বিলিয়ন অর্থাৎ ১৪০ কোটি মানুষ বাস করে ভারতে। কিন্তু জেনে আশ্চর্য হবেন যে এদের মধ্যে ১০০ কোটি ভারতীয়র কাছে সাধারণ খরচ করার মত উপযুক্ত অর্থ নেই। 

প্রয়োজনীয় খরচ ছাড়া বাকি অতিরিক্ত কোনও অর্থ সঞ্চয়ই থাকে না এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে। এমনটাই জানিয়েছে ব্লুম ভেঞ্চার্সের এই নয়া প্রতিবেদন।

বলা হয়েছে, ভারতে মাত্র ১৩-১৪ কোটি মানুষই প্রয়োজনের থেকে বেশি কিছু খরচ করেন। এই সংখ্যাটি মেক্সিকোর মোট জনসংখ্যার থেকেও অনেক কম। 

এছাড়াও আরও ৩০ কোটি মানুষ আছেন যারা ধীরে ধীরে খরচ করা শিখছেন, কিন্তু তাদের কাছে এখনও সামর্থ্য অনুসারে অর্থের যোগান নেই। ডিজিটাল পেমেন্ট ভারতীয়দের জন্য কেনাকাটা সহজ করে দিয়েছে কিন্তু এইভাবে রুপি খরচ করা নিয়ে এখনও বহু মানুষের মনে দ্বিধা রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ভোক্তা শ্রেণি সংখ্যায় বাড়ছে না, বরং যারা ধনী তারা আরো ধনী হচ্ছেন। ফলে বাজারের ধরন বদলে যাচ্ছে। সংস্থাগুলোও এখন সাধারণ জনগণের জন্য সাশ্রয়ী পণ্যের চেয়ে বিলাসবহুল ও উচ্চমানের পণ্য তৈরি করেই বেশি লাভ করছে।

এরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে অভিজাত ও বিলাসবহুল আবাসনের চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং দামি স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ার মধ্যে। অন্যদিকে, সস্তা ফোন ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের চাহিদা কমছে। 

এখন ভারতের মোট আবাসন বাজারের মাত্র ১৮ শতাংশ হচ্ছে সাশ্রয়ী বাড়িঘর, যা পাঁচ বছর আগেও ৪০ শতাংশ ছিল। ব্র্যান্ডেড পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এমন বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতা, যার বেশ ব্যয়বহুল। কোল্ডপ্লে বা এড শিরানের মতো আন্তর্জাতিক তারকাদের কনসার্টের উচ্চমূল্যের টিকিট হটকেকের মতো বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিবেদনটির অন্যতম লেখক সাজিথ পাই বিবিসিকে জানিয়েছেন, যেসব ব্যবসা এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে তারা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু যাদের ব্যবসা মূলত সাধারণ মানুষের চাহিদা নিরূপণের ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিল, তারা বাজার হারাচ্ছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির পর ভারতের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ধরন এমন ছিল যে, ধনীরা আরো ধনী হয়েছে। অন্যদিকে, গরিবরা আরো দুর্বল অবস্থায় পড়েছে। অবশ্য, এটি নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দশক ধরেই ভারতে আয় বৈষম্য বাড়ছে। ১৯৯০ সালে শীর্ষ ১০ শতাংশ ভারতীয়র হাতে ছিল জাতীয় আয়ের ৩৪ শতাংশ, যা এখন ৫৭ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের ৫০ শতাংশ মানুষের আয় জাতীয় আয়ের ২২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমেছে।

এদিকে, মার্সেইলাস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজারদের তথ্য অনুযায়ী ভারতের মধ্যবিত্তরাও সমস্যায় পড়ছে। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাদের বেতনের সমানুপাতিক বৃদ্ধি হয়নি। গত ১০ বছরে কর প্রদানকারী মধ্যবিত্তের আয় কার্যত একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এমনকী বহু মানুষের বেতন মুদ্রাস্ফীতির কারণে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। মধ্যবিত্তের সঞ্চয় গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে এসে দাঁড়িয়েছে।

মন্তব্য করুন