যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানিসহ পাঁচটি ইউরোপীয় দেশ যৌথভাবে মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মত হয়েছে৷ এছাড়া লন্ডন এবং বার্লিন মানবপাচার নেটওয়ার্ক মোকাবিলায় একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে সই করেছে৷
মানবপাচার মোকাবিলায় সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত আন্তঃদেশীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো, জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার, নেদারল্যান্ডসের অভিবাসনমন্ত্রী মারিওলাইন ফেবার, বেলজিয়ামের অভিবাসনমন্ত্রী নিকোল দ্য মুর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানেলিস ভারলিন্ডেন, যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এবং ব্রিটেনের সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডার মার্টিন হেউইট৷
ব্রিটেনের সাবেক পুলিশ প্রধান হেউইটকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সীমান্ত নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার৷
লেবার পার্টি ব্রিটেনের নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দলটি ক্ষমতায় আসলে মানবপাচার চক্রগুলোকে ভেঙ্গে দেওয়া হবে৷ এই প্রতিশ্রুতি পূরণে মার্টিন হেউইটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ইউরোপীয় দেশগুলোতে অনিয়মিত অভিবাসন একটি ক্রমবর্ধমান ইস্যু৷ চলতি বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনেও এটি ছিল প্রধান ইস্যু৷
চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার অনথিভুক্ত অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছেছে৷ অনিয়মিত পথে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৭০ জন৷ যা ২০১৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ৷
জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সাথে সোমবার স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে ইংলিশ চ্যানেলজুড়ে মানবপাচারের উদ্দেশে জার্মানিতে পরিচালিত কার্যকলাপকে ঘিরে নজরদারি করা হবে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “এই চুক্তি জার্মান প্রসিকিউটরদের বিপজ্জনক ছোট নৌকার সরঞ্জাম সরবরাহ এবং স্টোরেজ মোকাবিলায় সহায়তা দেবে। এছাড়া এটি যুক্তরাজ্য ও জার্মানিকে পাচার চক্রের ভিন্ন ভিন্ন কৌশলগুলো আরও ভালভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে৷’’
লন্ডনে জার্মানির রাষ্ট্রদূত মিগুয়েল বার্গার বলেছেন, ‘‘পাচার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ড হয়ে জার্মানিতে আসা লোকেদেরও ইংলিশ চ্যানেলে পাচার করা হচ্ছে৷’’
তিনি বলেন, “ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্য নিজেকে অভিবাসন সম্পর্কিত ইইউ চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করেছে। নতুন চুক্তির মাধ্যমে লন্ডন ও বার্লিন দেখবে কীভাবে আমরা আবারও আমাদের সহযোগিতা জোরদার করতে পারি।”
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসার বলেন, দুই দেশ অপরাধী চোরাচালান চক্রগুলোর অমানবিক কার্যকলাপ বন্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করেছে৷
লন্ডনে ইউরোপীয় মন্ত্রীদের এ আলোচনা মূলত ‘কালে ডায়লগ’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রন্টেক্স এবং ইউরোপোল সংস্থার প্রতিনিধিরাও আলোচনায় অংশ নেন।
মন্তব্য করুন