অভিবাসী পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র তুরস্ককে অনুরোধ জানাবে ইউরোপের দেশ গ্রিস৷ দেশটির অভিবাসন বিষয়ক এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এ কথা জানিয়েছেন৷
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা অভিবাসী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ভূমিকা নিতে পারছি না৷ আমরা আমাদের ইউরোপীয় সহকর্মী এবং প্রতিবেশী তুরস্কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে চাই৷’’
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘মানবপাচারকারী চক্রকে ভেঙে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চাই৷’’
অভিবাসনমন্ত্রী নিকোস পানাগিওতোপোলোস নভেম্বরে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়ার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
গ্রিক সরকার বলছে, এ বছরের প্রথম নয় মাসে ৩৭ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী এসেছেন দেশটিতে৷ যাদের বেশিরভাগ এসেছেন তুরস্কের উপকূল থেকে৷ চলতি বছর আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা করছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ৷
এদিকে, গ্রিস উপকূলে নিয়মিত নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে৷ মূলত অভিবাসীবাহী সমুদ্র অনুপযোগী নৌকাগুলোই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে৷ গ্রিক কর্তৃপক্ষের দাবি, মানবপাচারকারীরাই অভিবাসীদের অসহায়ত্বের সুযোগে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে অনেকের মৃত্যু হয়েছে৷
আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দারিদ্র্য ও সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা মানুষেরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে এসে ভাগ্য বদলাতে চান৷ তাদের অনেকের কাছেই গ্রিস হলো ইউরোপে ঢোকার প্রবেশমুখ৷
আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৫০ হাজার মানুষকে স্থান দিতে পারে গ্রিস৷ কর্মকর্তারা বলছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন নিয়ে চাপের মধ্যে আছে৷ দুইটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ৷
২০২১ সালে এজিয়ান সাগরীয় গ্রিক দ্বীপ লেসবস ও চিওসে দুইটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে গ্রিসকে ১৫ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ কিন্তু স্থানীয়দের বিরোধিতার মুখে আটকে আছে সেই প্রকল্পের কাজ৷
বিরোধিতার মুখে চিওসে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনাটি পুরোপুরি বাতিল করতে হতে পারে বলেও জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অভিবাসন কর্মকর্তা৷ লেসবসের বিষয়টি নিয়েও এখনও শঙ্কা কাটেনি৷
মন্তব্য করুন