শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যরাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াফিচারশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ভূমধ্যসাগর থেকে শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৫৩
ছবি- সংগৃহীত

মানবিক সংস্থাগুলো গত কয়েকদিনে ছোট নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা অন্তত ১১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) রাতে দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) পরিচালিত জাহাজ জিও ব্যারেন্টস ৭৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে৷ এরপর তাদের ইটালির উত্তর-পূর্বের বন্দর রাভেনাতে নামানো হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন পথগুলোর মধ্যে একটা হলো সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট৷ উদ্ধারস্থল থেকে রাভেনার পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল এমএসএফ। 

মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স প্ল্যাটফর্মে তারা এটিকে ‘জোর করে চার দিনের নেভিগেশন’ বলে উল্লেখ করেছে৷ জাহাজে থাকা ৭৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক জলসীমায় দুটো পৃথক অভিযানে উদ্ধার করা হয়।

ইটালির পার্লামেন্ট ২০২৩ সালে একটি ডিক্রি অনুমতি দেয়। প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি সরকারের জারি করা এই আইনে ভূমধ্যসাগরে একটি উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরই ইটালির কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত বন্দরে চলে যেতে হবে৷ এনজিওগুলোর অভিযোগ, এর ফলে সমুদ্রে আরো অনেক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। 

জাহাজের জন্য নির্ধারিত বন্দরগুলো প্রায়ই উদ্ধারস্থল থেকে অনেকটা দূরে৷ তাই সেখানে পৌঁছাতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যায়। ইটালি সরকারের দাবি, সিসিলির অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলো এবং লাম্পেদুসার মতো ছোট দ্বীপগুলো যাতে ভিড়ে উপচে না পড়ে, তা নিশ্চিত করার জন্য এই নিয়ম করা হয়েছে। 

এছাড়া ইটালির দক্ষিণে অবকাঠামোও কম৷ যদিও এনজিওগুলোর যুক্তি, এই নীতির ফলে তাদের উদ্ধারকাজে বাধা পড়ছে, ফলে আরো বেশি সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হচ্ছে।

পাল তোলা নৌকায় ৪৫ জনকে উদ্ধার

বুধবার রেসক-শিপ সংস্থা পরিচালিত পালতোলা নৌকা (নাদির) ৪৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীসহ একটি জলযান উদ্ধার করেছে৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে সমুদ্রে টানা দুই দিন ‘উদ্দেশ্যহীনভাবে ভেসে যাচ্ছিল’ নৌকাটি৷ অ্যালার্ম ফোন সংস্থার সতর্কতা জারির ফলে বিপদগ্রস্ত নৌকার সন্ধান মিলেছিল বলে জানিয়েছে রেসক-শিপ৷ 

ইতালিতে আগমন

বছরের শুরু থেকে ৩৪ হাজার ৭৬২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী সমুদ্রপথে ইটালিতে পৌঁছেছেন, যাদের কাছে কোনো নথি নেই৷ আগস্টের শুরু থেকে এক হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন ইটালিতে৷ জাতীয়তার ভিত্তিতে সবার আগে রয়েছেন বাংলাদেশিরা৷ এরপর রয়েছেন সিরীয়, টিউনিশীয় এবং মিশরীয়রা।

চলতি বছর সামগ্রিকভাবে ইটালিতে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা গত বছরের পরিসংখ্যানের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম৷ প্রতি মাসে আগমনের মোট সংখ্যা ২০২৩ সালে একই মাসে আগমনের মোট সংখ্যার চেয়ে অন্তত অর্ধেক বা তার কম।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্প অনুসারে, বছরের শুরু থেকে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় পথে হাজার জনেরও বেশি মানুষ (এক হাজার ২০ জন) প্রাণ হারিয়েছেন৷ ৪২ হাজারের বেশি লোক একই সময়সীমায় সেই রুটে পারাপারের চেষ্টা করেছে বলে রেকর্ড করা হয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, চলতি বছরের জুনে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন জন অভিবাসনপ্রত্যাশী সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরের পথে আসতে গিয়ে মারা গিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন৷ শুধু জুনেই এই সংখ্যাটা ছিল ৯০ জন৷ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কালাব্রিয়ার উপকূলে জাহাজডুবিতে কমপক্ষে ৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

পারাপারের চেষ্টা করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অর্ধেকেরও বেশি সমুদ্রে আটকা পড়েন বলে জানিয়েছে আইওএম। ২০২৪ সালের আগস্টের শুরু থেকে অন্তত ৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। 

আইওএমের পরিসংখ্যানে শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত যারা মৃত বা নিখোঁজ বলে নিশ্চিত করা যেতে পারে। প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে৷ কারণ অসংখ্য পারাপারের ঘটনা অনিবন্ধিত৷ এছাড়াও অনেক সময় তথ্য শুধু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থাকে।

মন্তব্য করুন