শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী পৌঁছালো ব্রিটিশ উপকূলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:০৫

ফরাসি উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে চলতি বছর আট হাজার ৬৪ জন অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। সবশেষ, ১২ এপ্রিল ১১টি নৌকায় পৌঁছেন ৬৫৬ জন অভিবাসী।

ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (১৪ এপ্রিল) এই তথ্য দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এ বছরের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী পৌঁছেছেন ব্রিটিশ উপকূলে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম চার মাসে আসা অভিবাসীনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৫৬৭ জন।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের হিসাব রাখা শুরু করার পর সেটিই ছিল ওই সময়ের রেকর্ড। কিন্তু চলতি বছরের হিসাব ছাড়িয়ে গেছে গত বছরের পরিসংখ্যানকেও।

১২ এপ্রিল আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যাটিও এখন পর্যন্ত চলতি বছরের দিনের হিসাবে সর্বোচ্চ। তবে একদিনে বেশি সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছিলেন ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। সেদিন ফরাসি উপকূল থেকে এসেছিলেন এক হাজার ৩০৫ জন অভিবাসী।

জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অন্তত ৪১ শতাংশ বেশি। গত বছর এই সময়ে এসেছিলেন পাঁচ হাজার ৭৩১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। আর ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় সংখ্যাটি ৬৫ শতাংশ বেশি। কারণ ওই বছরে এই সময়ে এসেছিলেন চার হাজার ৮৯৯ জন।

যুক্তরাজ্যের ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলপ বলেছেন, ফরাসি উপকূল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশী আসার এই নতুন রেকর্ড প্রমাণ করে দেয়, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ‘‘আমাদের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন।’’

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সবাই ছোট নৌকায় বিপজ্জনক পারাপার বন্ধ করতে চাই। কারণ, এই পারাপার জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে এবং আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মানবপাচারকারী চক্রগুলো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেঁচে থাকা বা মারা যাওয়া নিয়ে চিন্তিত নয়, তাদের লক্ষ্য অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শোষণ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। মানবপাচারকারী চক্রগুলোর ব্যবসায়িক মডেল ভেঙে ফেলা এবং তাদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা কোনো অবস্থাতেই থামবো না।’’

ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ কারণেই সরকার যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা পেশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর গতি এবং সংখ্যা বাড়ানো, চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকায় তোলার মতো অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।

অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং এর মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া মানবপাচারকারী চক্রগুলোকে ভেঙে দিতে গত ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল দুই দিনের একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য।

মানবপাচারের বিরুদ্ধে সমন্বিত ও আন্তর্জাতিকভাবে লড়াই জোরদার করতে ৪০টি দেশের মন্ত্রী ও আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন এই সম্মেলনে৷ মানবপাচার ঠেকাতে এটিই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

এছাড়া, মানবপাচারে জড়িত চক্রগুলোর বিরুদ্ধে সমন্বিত লড়াই করতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, সুইডেন, টিউনিশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে একটি চুক্তিও সই হয়েছে। এসব দেশগুলোর বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনিয়মিত অভিবাসনের ঝুঁকি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচারেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

মেটা, টিকটক, এক্স-এর মতো বিভিন্ন জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে মানবপাচারে উৎসাহ যোগানো বিজ্ঞাপনগুলো সরিয়ে নিতেও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করছে ব্রিটিশ সরকার।

মন্তব্য করুন