বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ইসরায়েলে জাতিসংঘের সংস্থার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে বিল পাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৩

ফিলিস্তিনের জনগণের সহায়তার জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএন এজেন্সি রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনিয়ান রিফিউজিসের (আনরোয়া) কার্যক্রম ইসরায়েলে নিষিদ্ধ করতে বিল পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে।

সোমবার এ সংক্রান্ত ২টি বিল উত্থাপনের পর নেসেটের ১২০ জন এমপির মধ্যে ৯২ জনই ইসরায়েলে আনরোয়ার কার্যক্রম বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বাকি ২৮ জনের মধ্যে ১০ জন বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন ১৮ জন। আগামী ৯০ ‍দিন পর বিল দু’টি আইনে পরিণত হবে।

একটি বিলে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ভৌগলিক সীমার ভেতরে কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, কোনো পরিষেবা প্রদান এবং প্রকাশ্য বা গোপন— কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারবে না আনরোয়া। সেই সঙ্গে পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আনরোয়ার সদর দপ্তরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। যদি সেই কার্যক্রম চালু করতে হয়, সেক্ষেত্রে শর্ত হলো— অবশ্যই যাবতীয় কার্যক্রম ইসরায়েলের অনুমতি সাপেক্ষে করতে হবে। আনরোয়ার সদর দপ্তর পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ অঞ্চলে।

আর একটি বিলে বলা হয়েছে, আনরোয়ার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করছে ইসরায়েল। তাই ইসরায়েলের কাছ থেকে যা যা সহায়তা ও সহযোগিতা পেতো সংস্থাটি— বিল কার্যকর হওয়ার পর থেকে সেসব পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এছাড়া আনরোয়ার কর্মীরা কূটনৈতিক ভিসার পরিবর্তে সাধারণ ভিসা প্রদান করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিলটিতে।

১৯৪৭ সালে আল আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে প্রতিষ্ঠিত হয় আনরোয়া। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফিলিস্তিনে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এর যাবতীয় দাপ্তরিক এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কার্যক্রমের জন্য আনরোয়া ইসরায়েলের ওপর প্রায় পুরোপুরি নির্ভরশীল। তাছাড়া প্রতি বছর আনরোয়ার তহবিলে আর্থিক সহায়তাও দিতো ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েলের সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির পর থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলে আসছে।

ফলে ইসরায়েলে যদি আনরোয়ার কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়, সেক্ষেত্রে নিকট ভবিষ্যতে তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে গাজা এবং পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ওপর। ইসরায়েল অসহযোগিতা করলে স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না আনরোয়া। গত ৭ দশকেরও বেশি সময় ধরে বেকারত্ব ও দারিদ্রপীড়িত ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন জাতিসংঘের এই সংস্থা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধার। সেই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশপাাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা। হামলার জবাব দিতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

৭ অক্টোবর হামলার সঙ্গে জড়িতরা আনরোয়ার বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ করে আসছে ইসরায়েল। তবে আনরোয়া এবং জাতিসংঘ বরাবরই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

সোমবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বিলটি পাসের পর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে  আনরোয়ার প্রধান দাতা দেশ কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্য। বিলটি কার্যকর না করতে ইসরায়েলের সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে এই রাষ্ট্রগুলো। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

মন্তব্য করুন