দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশ পাপুয়া নিউ গিনির একটি সোনার খনি এলাকার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে অন্তত ৩০ জনের প্রাণ গেছে।
দেশটির এনগা প্রদেশের পোরগেরা সোনার খনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে সোমবার পুলিশ জানিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতভর কারফিউ জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনে ‘প্রাণঘাতী শক্তি’ প্রয়োগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অ্যালকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে ওই এলাকায়।
পোরগেরা এলাকাটি নিয়ন্ত্রণে ছিল স্থানীয় পিয়ান্দ উপজাতির নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু গত আগস্টের কোনো এক সময় সেখানে সাকার গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বসতি গড়লে অস্থিরতা শুরু হয়।
পুলিশ বলছে, বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়া পর রোববার তিনশরও বেশি গুলি চলে।
পাপুয়া নিউ গিনির পুলিশ কমিশনার ডেভিড ম্যানিং বলেন, অবৈধ খনির শ্রমিক আর বসতি স্থাপনকারীদের কারণে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তারা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জমির মালিকদের হয়রানি করতে সহিংসতাকে কাজে লাগাচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়ে বিবিসিকে তিনি বলেন, সোজা কথা, লোকালয়ে অস্ত্র তুলে নিলে, অথবা কাউকে ভয় বা হুমকি দিলে গুলি চালানো হবে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তীব্র সহিংসতার পরিস্থিতিতে কানাডার মালিকানাধীন পাপুয়া নিউ গিনির দ্বিতীয় বৃহত্তম খনির কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পোস্ট-কুরিয়ার জানায়, গোলাগুলির পাশাপাশি ভবনগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ রাখা হয়েছে হাসপাতাল ও সরকারি অফিসসমূহ।
পোরগেরা সোনার খনি একসময় পাপুয়া নিউ গিনির বার্ষিক রপ্তানি আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময় জাতিগত সহিংসতার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্পাদন বন্ধ রাখা হয়। সাম্প্রতিক এই সহিংসতাকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
দেশটির পার্বত্য অঞ্চলে মাঝেমধ্যেই জাতিগত সংঘাতের খবর পাওয়া যায়। চলতি বছরের শুরুতে ইস্ট সেপিক প্রদেশের তিনটি গ্রামে হামলায় ১৬ শিশুসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হয়।
২০২২ সালে খনি এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত ১৭ জনের প্রাণ যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটিতে সফরে গিয়ে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান পোপ ফ্রান্সিস।
মন্তব্য করুন