আলজেরিয়ার মরুভূমি থেকে ১৪ অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে ১২ জনই সিরিয়ার নাগরিক৷ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ জানায়, সাগরের চেয়ে সাহারা মরুভূমিতে বেশি অভিবাসী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপরই বিয়োগান্তক এই ঘটনার কথা জানা গেল। আলজেরিয়ার সিরীয় দূতাবাস নিশ্চিত করেছে, নিহতদের মধ্যে ১২ জন সিরীয় রয়েছেন, নিখোঁজ পাঁচজনও সেই দেশের নাগরিক। বাকি দুজন আলজেরীয় বংশোদ্ভূত। সবচেয়ে কম বয়সী দুই ভুক্তভোগীর একজনের বয়স দশ বছর এবং অন্যজনের ১৬। আর সবচেয়ে বেশি বয়সী মৃতের বয়স ৫৫ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আলজেরিয়ার মরুভূমিতে অভিবাসী খুঁজতে দক্ষ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘‘সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশন’’ নিখোঁজ অভিবাসীদের খুঁজছেন। তবে অভিবাসী নিহতের এই ঘটনায় নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি আলজেরিয়া।
দেশটিতে অবস্থিত সিরীয় দূতাবাসের অনিয়মিত অভিবাসন বিভাগের প্রধান বাসেম ফারুখ জানান, ভুক্তভোগীরা মরুভূমিতে দিক হারিয়ে ফেলেছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘লিবীয় কর্তৃপক্ষ এই অভিবাসীদের বিতাড়ন করেছিল এবং আলজেরিয়ার দিকে পালাতে বাধ্য করেছিল। ’’‘আমরা একইভাবে আরো সিরীয়কে লিবিয়াত্যাগ করতে দেখবো এবং আমি আরো দুর্যোগের আশঙ্কা করছি, আমাদেরকে তার জন্য প্রস্তুত হতে হবে,’’ যোগ করেন তিনি।
তবে লিবীয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি৷ আলজেরিয়ার দক্ষিণের মরু প্রদেশ ইলিজি ইউরোপমুখী অভিবাসীদের রুটের মধ্যে পড়ে। প্রতিবছর অনেক অভিবাসী এই পথে ইউরোপের দিকে যাত্রা করেন।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে জানায়, অনিয়মিত পথে ইউরোপের আসার চেষ্টা করতে গিয়ে সমুদ্রের চেয়ে দ্বিগুণ মানুষ মরুভূমিতে প্রাণ হারাচ্ছেন। এদের এক চতুর্থাংশ বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মারা যান, আর চল্লিশ শতাংশের মতো প্রাণ হারান গাড়ি দুর্ঘটনায়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই পথে অভিবাসীরা নানা গোষ্ঠীর কাছে ধর্ষণ এবং শোষণের শিকার হন। এমনকি জোর করে অঙ্গ সংগ্রহের ঘটনাও ঘটে।
কেউ কেউ যাত্রাপথের খরচ মেটাতে একটি কিডনি বিক্রি করে দেন। তবে অনেককে বেহুঁশ করে সম্মতি ছাড়াই তার কিডনি কেটে নিয়ে কালো বাজারে বিক্রির ঘটনাও ঘটে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মন্তব্য করুন