পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি অংশ গতকাল ২৯শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কমিউনিটির মাঝে দ্বিধাভিত্তির সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির প্রধান রানা তসলিম উদ্দিন বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তায় এ অনুষ্ঠান আয়োজনে অংশগ্রহণ করার জন্য কমিউনিটির সকলকে আমন্ত্রণ জানাই। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা যুক্ত হয়েছেন তাদের নিয়ে আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটি গঠন করি।
পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির অপর একটি অংশের মুখপাত্র রাজিব আল মামুন, সাজিদ মোহাম্মদ এবং কমিউনিটির দীর্ঘদিন বসবাসকারী প্রবীণ ব্যক্তিত্ব সোয়েব মিয়া জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আহ্বান সবার কাছে নাও পৌঁছাতে পারে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই অনুষ্ঠান আয়োজনে কমিউনিটির অন্যান্য নেতাদের আড়াল করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজধানী লিসবনের বাইরের বিভিন্ন শহরগুলোতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করেন এ বিষয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায়, আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করা হয়নি।
পর্তুগালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পর্তো থেকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে সেখানে দীর্ঘদিন যাবত বসবাসকারী প্রবীন বাংলাদেশি বলেন, বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এই শহরটিতে বসবাস করে,পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানে আয়োজনে আমরাও অংশগ্রহণ করতে পারতাম তবে এ বিষয়ে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা হয়নি। আয়োজক কমিটিও লিসবনের বাইরের শহরগুলোতে বসবাসকারীদের সাথে যোগাযোগ না করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে আয়োজক কমিটি অনুষ্ঠানে কোনো প্রকার নাচ-গান না রাখার বিষয়ে ধর্মীয় একটি গ্রুপকে আশ্বস্ত করে তাদের পক্ষে রেখেছিলেন। তবে অনুষ্ঠানে নাচ-গান করার কারণে ধর্মীয় সেই গ্রুপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার হয়েছেন। তারা বলছেন, যেহেতু আয়োজক কমিটির প্রধান রানা তসলিম উদ্দিন পর্তুগালে বাংলাদেশিদের প্রধান মসজিদের কমিটির সভাপতি সুতরাং একজন মসজিদের সভাপতি হয়ে নাচ গান আয়োজন করাটা ধর্মীয় রীতিনীতি পরিপন্থি।
অপরদিকে সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিরা বলছেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংস্কৃতির নাচ, গান উপস্থাপন করা দোষের কিছু নয়। এমনকি বাংলাদেশেও বিজয় দিবসের আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কনসার্ট এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন রাখা হয়। সুতরাং এটি বাংলাদেশের জাতীয় অনুষ্ঠানের একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে।
অনুষ্ঠানটি বেলা ১১টায় শুরু হয় সেখানে বিভিন্ন দেশীয় খাবারের স্টল সহকারে নানান ধরনের পণ্যের পসরা সাজানো হয়। একই সাথে সাথে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন সহকারে প্রবাসী শিল্পীদের কনসার্টে গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় মিনিসিপিলিটির কমিশনার, লিসবন বাংলাদেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিসহ হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন