মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও মানবপাচারের অভিযোগ পুরোনো। বিগত সরকারের সময়ে এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা ও প্রতিবাদ সত্বেও দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সরকারের পক্ষ থেকে। উপরন্তু এসব সিন্ডিকেট ও অনিয়মের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন জড়িত ছিলো বলে প্রমাণ মেলে।
তবে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ পুলিশ অভিবাসী শ্রমিকদের প্রেরণের আড়ালে অর্থ পাচার, সিন্ডিকেট করে অভিবাসন ব্যয় বৃদ্ধি এবং মানবপাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।
এরই অংশ হিসেবে মালয়েশিয়া সরকারকে দুই জনশক্তি ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও হস্তান্তর করতে অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালয়েশিয়া পুলিশের কাছে গেল ২৪ অক্টোবর এই চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। খবর ব্লুমবার্গের।
আমিনুল ইসলাম এবং রুহুল আমিন নামের দুই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয় তারা এমন একটি ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন যেখানে "ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে অর্থ আদায় করেছে" এবং তাদের "শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন" করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় সর্বশেষ ২০২২ সালের আগষ্টে শ্রমিক পাঠাতে সরকার-নির্ধারিত জনপ্রতি ব্যয় ছিলো ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু মালয়েশিয়া যেতে গড়ে একজন বাংলাদেশীকর্মী খরচ করেছেন ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। দেড় বছরে সাড়ে ৪ লাখের মতো লোক পাঠিয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে এ খাতে।
সরকার নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে বেশি নেয়া হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা করে ‘চক্র ফি’ নেয়য়া হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। গুটিকতক এজেন্সি মালিকরা সিন্ডিকেট করে এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এতে সরকারের একাধিক মন্ত্রী-এমপি জড়িত ছিলেন বলেও গণমাধ্যমে উঠে আসে।
মন্তব্য করুন