বাংলাদেশে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশব্যাপী বেছে বেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের হত্যা, বাড়িঘর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জোরপূর্ব পদত্যাগে বাধ্য করা, মন্দির গির্জায় হামলা ও পীর আউলিয়াদের মাজার গুড়িয়ে দেওয়া, চাঁদাবাজি, নিরীহদের বাড়ি-ঘর দখল হিন্দু ও গণহারে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্ববাসীকে অবহিত করতে ৯ সেপ্টম্বর হাউজ অব কমন্সের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
সকাল থেকেই ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে শত শত নারী-পুরুষ প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, তথাকথিত ‘কোটা আন্দোলনের’ নেপথ্যে থেকে দেশদ্রোহী গুষ্টি তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের সহযোগিতায় উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে আজ ধ্বংসের তলানিতে নিয়ে গেছে।
আমরা সবসময়ই বলে এসেছি এটা কোটা আন্দোলন নয়- ক্ষমতা দখলের দুরভিসন্ধি। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি নিধনে তারা মামলা-হামলা আর হত্যায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ আজ প্রায় দেউলিয়া। দেশ এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল দেশপ্রেমিক মানুষকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, একটি গোষ্ঠী এই সরকারের কাঁধে ভর করে সংবিধান ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে চায়। যারা এমনটি চাইছে এরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল, এছাড়া ওয়াহাবীরা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করে সম্প্রীতির বাংলাদেশে খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। আমরা ব্রিটিশ সরকারসহ বিশ্ববাসীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এই সমাবেশ থেকে আমরা গণতান্ত্রিক বিশ্বকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির প্রকৃত অবস্থা অবহিত করছি। সমাবেশস্থলে হাজারো কণ্ঠে গাওয়া হয় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জালাল উদ্দিন, হরমুজ আলী, নইমুদ্দিন রিয়াজ, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, রবিন পাল, আ.স.ম. মিসবাহ, সৈয়দ ছুরুক আলী, আনসারুল হক, মেহের নিগার চৌধুরী, আনজুমান আরা আঞ্জু প্রমুখ।
এছাড়া পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে হাজারো বাঙ্গালী নারী-পুরুষ সমবেত কণ্ঠে গাইলেন জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। সম্প্রিতির কনসার্ট শিরোনামে নারী সমাজের আয়োজনে একই দিনে সন্ধ্যা পাঁচটা ত্রিশ মিনিটে ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারও বাঙালি সমবেত হন পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে।
ব্রিটেনের স্বনামখ্যাত কণ্ঠ শিল্পি হিমাংসু গোস্বামী, গৌরি চৌধুরী, উর্মি মাজহার, শাহ রুমি হক, শাহনাজ সুমি, পুষ্পিতা গুপ্তা ও অজয়ন্তা দেবরায় ও শর্শিলী চৌধুরীর নেতৃত্বে হাজারও মানুষের সমবেত কণ্টে ব্রিটেনের মাটিতে গাওয়া হয় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত।
এ সময় লন্ডনের আলতাব আলী পার্ক পরিণত হয় এক মিনি বাংলাদেশে। সমবেত কণ্টে জাতীয় সঙ্গীত শেষে আগতরা জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা ও সংবিধান রক্ষার শপথ নেন।
মন্তব্য করুন