শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যরাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াফিচারশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘রিমাল’ কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ২৬ মে ২০২৪, ১০:১৮

ঘূর্ণিঝড় সিডর, ইয়াস, আইলা, মহাসেন, বুলবুলের আঘাতের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি উপকূলীয় উপজেলার মানুষেরা। প্রতিবছরই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী (ঘনীভূত) হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘রিমাল’। এ নামটি ওমানের দেওয়া। এর অর্থ বালি। ঘূর্ণিঝড়টি আগামী রোববার (২৬ মে) নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের এ পূর্বাভাস কপালে চিন্তার রেখা এনে দিয়েছে উপকূলীয় এলাকার মানুষের।

প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণও বেশ আকর্ষণীয়। তবে মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এবারের ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ অর্থ কি? এছাড়াও এর নামকরণ নিয়েও চলছে নানান তর্ক বিতর্ক। জানেন কি ঝড়ের নাম কারা দেয়, কীভাবে ঝড়ের নামকরণ করা হয়? ঝড়ের নামকরণের আগে দেখা হয় তা যেন আপত্তিকর ও বিতর্কিত না হয়। উচ্চারণ করা সহজ এবং মনে রাখা সহজ হওয়া উচিত। প্রথমে ঝড়ের নামকরণের কোন নিয়ম ছিল না। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা এর জন্য একটি আদর্শ পদ্ধতি তৈরি করেন।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়, যাতে মানুষ ঝড়ের কথা মনে রাখতে ও শনাক্ত করতে পারেন। একটি নাম দিয়ে সচেতনতা তৈরি ও সতর্কতা প্রেরণ করা যেন সহজ হয়। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা যেমন-বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও), এশিয়ার জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়।

ভারতের আইএমডি ছয়টি আবহাওয়া কেন্দ্রের মধ্যে একটি যা ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়। এই আবহাওয়া কেন্দ্রগুলো কেবল ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়, তবে নামগুলো এমনভাবে নেওয়া হয় যাতে কারও অনুভূতিতে আঘাত না হয় এবং এই নামগুলোর পুনরাবৃত্তি হয় না।

২০০৪ সালে, ভারত মহাসাগর অঞ্চলের জন্য ঝড়ের নামকরণের জন্য একটি সূত্রে ঐকমত্য পৌঁছেছিল। এই অঞ্চলে যে ৮টি দেশ পড়ে সেগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। ভারত এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলো ২০০০ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের অনুশীলন শুরু করে। ভারত ছাড়াও এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। এই দেশগুলো ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি তালিকা সামনে রেখেছে। এছাড়াও, ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের জন্য রাষ্ট্র সংঘের ওয়ার্ল্ড মেট্রোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন কিছু নিয়ম তৈরি করেছে।

আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের অনুশীলন ১৯৫৩ সালে শুরু হয়েছিল। একই সময়ে, এটি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তা ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা।

এছাড়া ২০১৯ সালে ইরান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন যুক্ত হয়। যখন একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন এই ১৩টি দেশ তাদের ক্রম অনুসারে নাম নির্ধারণ করে। সোমালিয়ায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তার নামকরণ করেছিল ভারত, যার নাম ছিল গতি। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। এবার ২০২৪-এ ‘রিমালের’ নামকরণ করেছে ওমান। যার অর্থ বালি। পরবর্তী ঝড়ের নাম ঠিক করবে পাকিস্তান।

মন্তব্য করুন