প্রতি বছর ঘটা করে সরস্বতী আরাধনা হয় চৈতি ঘোষালের বাড়িতে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা অন্য রকম। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন অভিনেত্রী।
রাস্তায় নেমে প্রতিটি আন্দোলনেই শামিল থেকেছিলেন। দুর্গোৎসবেও নেই বলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতি বছরের মতো ঘটা করে ঘরে লক্ষ্মীপুজোও করেননি তিনি। সরস্বতী পুজোতেও খানিক সেই ধারাই বজায় রাখছেন চৈতি। তাঁর বাড়িতে নিয়ম মেনে পুজো হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তিনি নিজেই থাকছেন না সেই পুজোয়। তাই প্রতি বারের মতো হইচই নেই।
সরস্বতী পুজোয় বাড়িতে না থাকলেও, সরস্বতী বন্দনা থামিয়ে রাখছেন না চৈতি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “সরস্বতী বন্দনা করতেই যাচ্ছি কোচবিহারে। সেখানে আমার নাটক ‘খেলাঘর’ মঞ্চস্থ হবে। এই নাটকের মাধ্যমেই নারীর কথা তুলে ধরা হয়। হেনরিক ইবসনের বিখ্যাত নাটক ‘এ ডল’স হাউস’-এর বাংলা সংস্করণ। এই নাটকে নারীর অবস্থান, নারীমুক্তি, নারীর কথা বলার অধিকারের প্রসঙ্গ উঠে আসে।”
আরও একটি প্রাসঙ্গিক সংলাপের কথা বলেন চৈতি। তাঁর কথায়, “স্বামীর মুখে একটি সংলাপ রয়েছে, ‘অন্যায় আবার কী? যেটা কেউ জানে না, যার কোনও প্রমাণই নেই, সেটা অন্যায় হয় কী ভাবে?’ সেই কথায় নীরা বলে, ‘আমার নিজের কাছে তো অন্যায়ই।’ এই সংলাপগুলিতো পরিস্থিতির সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক।
এই নাটক করার কথা প্রায় এক বছর আগে থেকে। তখন জানতাম না, অগস্ট মাসে কলকাতায় এমন একটি ঘটনা (আরজি কর) ঘটে যাবে এবং আমার জীবন বদলে যাবে।”
আন্দোলনের থেকে চৈতির আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অভিনেত্রী বলেছেন, “এই আন্দোলনের পরে বুঝেই আবার ‘রক্তকরবী’ নাটকটা করা দরকার। আমি বড় করে করতে চাই। আন্দোলনে ছেলেমেয়েরা ‘রক্তকরবী’র সংলাপে মুখর হয়েছিল। মনে আছে বর্ধমান থেকে অনুষ্ঠান সেরেও আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। কয়েক জন সাথী ছিলেন।
পরে সেই সাথীদেরও হারিয়েছি। তবে এই ‘খেলাঘর’ নাটকটা আমার সাথী হয়ে রয়েছে। তাই এটাই আমার সরস্বতী বন্দনা এ বার। লক্ষ্মীপুজোতেও কোনও আড়ম্বর ছিল না এ বার। লক্ষ্মীও জাস্টিস চান, এটাই বলেছিলাম। সরস্বতী পুজোতেও তাই নারীর কথাই বলব।”
মন্তব্য করুন