মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

হানাহানির জগতে চুমুর চেয়ে মধুর কী হতে পারে?

কবীর সুমন
  ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:০১
ছবি-সংগৃহীত

অবাক হয়ে যাচ্ছি, লোকে এতে রুষ্ট হচ্ছে দেখে। একটা মানুষ একটা মানুষকে চুমু খাচ্ছে। একজন পুরুষ হয়তো কোনও মহিলাকে চুমু খাচ্ছেন। কিংবা একজন মহিলা একজন পুরুষকে। একজন পুরুষ আর একজন পুরুষকে কিংবা এক নারী অন্য নারীকেও এ ভাবে চুমু খেতে পারেন। এর চেয়ে মধুর, এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে এই হানাহানির জগতে?

আমার না হয় ৭৬ চলছে। আগামী মার্চে ৭৭-এ পা দেব। আমি তো বুড়ো মানুষ হয়ে গিয়েছি, সেই ভাবে দেখতে গেলে। তার পরেও এ সব দেখে ভেবেছিলাম, বান্ধবীদের বলব, চলো তো আমরা চুমু খাই। দেখি তো কী হয়! তাঁরা হয়তো রাজিও হবেন। কিন্তু আড়ালে। তার ন্যায্য কারণ আছে। 

ওঁদের যুক্তি, “তোমায় প্রকাশ্যে চুমু খেলে খবরের কাগজে নাম বেরিয়ে যাবে! অন্য কাউকে হলে হত।” আমার একাধিক বান্ধবী। কেউ হয়তো কারও বোন, বৌ-ও হতে পারেন। তাই ওঁদের যুক্তি মানা যায়। কিন্তু যাঁরা চুমু খেলেন, তাঁরা তো সেটা নন। ওঁরা তো চমৎকার একটা জিনিস করলেন। আমি ওঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও যাঁরা এটা করেছেন তাঁরা তো আর আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব এই ভেবে চুমু খাননি। তাঁদের উদ্দেশে বলব, সারা জীবন যেন ওঁরা এ ভাবে চুমু খেয়ে যেতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। তার মধ্যে একটি, এ ভাবে প্রকাশ্যে ভালবাসা প্রদর্শন কি কোনও ভাবে ‘লোকদেখানো’?

জোর গলায় বলেছি, একেবারেই না। লোকদেখানো মনে হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলি, হিন্দুদের বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ‘লাজাঞ্জলি’। সেখানে আগুনে খই ফেলার সময় স্বামী কী সুন্দর পিছন থেকে তাঁর নববধূকে জড়িয়ে ধরেন। এখানেও তো দুটো শরীর পরস্পরের স্পর্শ পায়। আহা, কী দৃশ্য! সেটাও তো প্রকাশ্যে হচ্ছে। তাতে কোনও আপত্তি উঠছে না তো? আবার খ্রিস্টানদের বিয়ের পর পুরোহিত নির্দেশ দেন, এ বার বর-বৌকে চুমু খেতে পারেন। 

তাতেও কারও সমস্যা নেই। ধরুন, আমিই কাউকে ভালবাসছি। তিনি ৭৬-ও হতে পারেন কিংবা ৮০। না হওয়ার কোনও কারণ নেই। ওই মুহূর্তে আমরা তো পৃথিবীতে একা! কী আসে যায়? ওই মুহূর্তে যদি বজ্রপাতেও আমাদের মৃত্যু হয়, তাতেই বা কী এসে যায়? বরং হানাহানির যুগে এটা তো বাঁচার, ভালবাসার শক্তিশালী নিশান।

আর একটা কথা বলি, বিষয়টি শীতকালে হল। আরও ভাল ব্যাপার। এই প্রসঙ্গে ব্রেখটের লেখা একটি কবিতার দুটো পঙ্‌ক্তি মনে পড়ে গেল, ‘বছর ফুরোতে চলল, ভালবাসা শুরু হল!’

মন্তব্য করুন