মা হওয়ার পর নাকি অভিনেত্রীদের কেরিয়ারে গতি কমে যায়। সন্তানই যেন ধ্যান জ্ঞান হয়ে ওঠে তাঁদের। বলিউডে সেই বদ্ধমূল ধারণা ভেঙে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী করিনা কপূর খান। তাঁর থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে তাঁর ভ্রাতৃবধূ আলিয়া ভট্ট।
মা হওয়ার মাস চারেকের মাথায় ওজন কমিয়ে একেবারে পুরোদমে শুটিং শুরু করে দেন তিনি। এদের সকলকে ছাপিয়ে গেলেন টলিপাড়ার অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত! অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ন’মাস পর্যন্ত কাজ করেছেন। ‘নিম ফুলের মধু’ ধারাবাহিকে কাজ করছিলেন মানসী। ধারাবাহিক শেষ হতেই মা হন তিনি।
সি সেকশন করে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন। তাও মোটে ২২ দিন মতো হয়েছে। কিন্তু নিজেকে ছুটি দিতে নারাজ তিনি। কারণ কাজেই তাঁর শান্তি। সদ্যোজাতকে নিয়ে যাচ্ছেন সেটে। কাজের ফাঁকেই খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো সবই চলছে। পাশাপাশি ছেলেকে স্তন্যপানে অভ্যস্ত করাতে নারাজ মানসী।
ধারাবাহিকের কাজ শুরু হতে আরও মাসখানেক দেরি। কিন্তু এই সময়টা তিনি বসে থাকতে চান না। এই অবসরে ফটোশুট, কোলাবরেশনের কাজ এগিয়ে রাখছেন। ছোট্ট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সেটে যাচ্ছেন। মা হওয়ার পর মাতৃত্বকালীন ছুটির প্রয়োজন হয় মহিলাদের। কিন্তু মানসী যেন সকলের থেকে আলাদা, তিনি ছুটি চান না।
মানসীর কথায়, ‘‘আমার সি সেকশন হওয়ার চার দিন পর কিন্তু ছেলেকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরি। কারণ গাড়ি চালানোটা আমার কাছে চাপমুক্তির মতো। আর এই যে এত তাড়াতাড়ি কাজে ফিরেছি কারণ কাজের মধ্যে শান্তি খুঁজে পাই। এটা কারও সঙ্গে কোনও পাল্লা বা প্রতিযোগিতা নয় আমার তো কোনও শারীরিক অসুবিধা হচ্ছে না। বরং ১৫ কেজি ওজন কমেছে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করছি। কিন্তু সবটা করছি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।’’
যদিও সদ্যজাত সন্তানকে সময়ে সময়ে স্তন্যপান করানোটাও একটা বড় দায়িত্ব। মানসী ছেলেকে সেই অভ্যেসের মধ্যে বড় করছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি ছেলেকে স্তন্যপানে অভ্যস্ত করাচ্ছি না। কারণ এই অভ্যেস করালে ও সেটা ছাড়া থাকতে পারবে না। এ দিকে মায়ের দুধও দরকার সন্তানের। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দুগ্ধ নিষ্কাশন করে রাখি। তার পর সেটা আমি অথবা আমার পরিবারের অন্য কেউ খাইয়ে দেয়।
কারণ মাস কয়েক পরে এই অভ্যেস থাকলে আমি কাজে বেরোতে চাইলে আমাকে ছাড়তে চাইবে না। আমাকে সব দিক দেখতে হবে। কাজে তো বেরোতেই হবে, ভবিষ্যৎটা ভাবতে হবে।’’ শুধু ছেলের ক্ষেত্রে নয়, মেয়ের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্ব করেছেন মানসী। মা হওয়ার কোনও বাড়তি চাপ নেই তাঁর। বরং সব দিকে সামাল দিতে ভাল লাগছে। এটাই যেন মাতৃত্ব উপভোগ তাঁর কাছে। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমি যেমন আমার পরিবারকে অবহেলা করতে পারব না।
তেমনই কাজকে অবহেলা করতে পারব না। আর আমি কাজের মধ্যে থেকেই সবাইকে ভাল রাখতে পারব।’’ এই নববর্ষে নতুন মা বলে তেমন ভালমন্দ খাওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই তাঁর। অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন সেই ‘ক্রেভিং’ অনুভব করেননি। শুধু চান দুই সন্তানকে নিয়ে বছরের পয়লা দিনটা আনন্দে কাটাবেন।
মন্তব্য করুন