শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে যা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৪
ছবি-সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবি করেন।

এর আগে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

প্রশাসনের আশ্বাসে ওই দিন দিবাগত রাতে অনশন ভাঙলেও পরদিন আবারও অনশন শুরু হয়। এরপর গতকাল রাতে পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানায় প্রশাসন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিবছর ৪০টি আসনে পোষ্য কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে হলে অন্তত ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

একজন চাকরিজীবী একবারই পোষ্য কোটা ব্যবহার করতে পারবেন। চাকরিজীবীর সন্তানদের ক্ষেত্রে এই কোটা প্রযোজ্য হবে।

তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ সকাল ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান।

সেখানে গিয়ে তারা পোষ্য কোটা বাতিলসংক্রান্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ এনেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রতিবাদ জানাতে গেলে এক শিক্ষার্থীকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধাক্কা দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, পূর্বের নিয়মেই পোষ্য কোটায় ভর্তি নিতে হবে।

পোষ্য কোটাসংক্রান্ত সব শর্ত বাতিল ও ফের বহালের দাবিতে আগামীকাল থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ ঘোষণার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সরাসরি ইন্ধন রয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করতে হবে। এ দাবিতে দুপুরে বের হওয়া মিছিলটি ছেলেদের ১০টি আবাসিক হল ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছিল। প্রশাসনিক ভবনের মধ্যে আটকে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘পোষ্য কোটা মানেই অযোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়া। পোষ্য কোটা নিয়ে গতকাল প্রশাসন সংস্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূইয়া বলেন, ‘অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আমরা অবস্থান নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কারোরই পোষ্য কোটার কোন যৌক্তিকতা নেই।

অজপাড়াগাঁয়ের একজন কৃষকের সন্তান যদি মেধার ভিত্তিতে জাহাঙ্গীরনগরে পড়াশোনা করতে পারে, তাহলে একজন শিক্ষার্থী যে জাহাঙ্গীরনগরের ছোট থেকে বড় হয়েছে, ভালো স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করেছে তার কোনো ধরনের প্রিভিলেজ লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।’

এ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরা গতকাল অনশন করেছি। আজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোটা বহালের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে আমাদের পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলেন। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে ধাক্কা দেন। আমি এ প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই।’

মন্তব্য করুন