শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

ডাবল অ্যাবসেন্টের হুমকি দেওয়া শিক্ষক ক্ষমা চাইলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:১৩

ক্লাস বর্জন করে 'গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিলে ডাবল অ্যাবসেন্ট বা দুই দিন অনুপস্থিতি দেখানোর হুমকি দেওয়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) প্রভাষক তাহমিনা রহমান দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।

রোববার (৬ এপ্রিল) দিনভর সমালোচনার মুখে মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।

পোস্টে তাহমিনা রহমান লিখেছেন, ‘My Sincere Apology, আমি সাম্প্রতিক ঘটনাটি নিয়ে কিছু বলতে চাই, যা ৭ এপ্রিল, ২০২৫-এ গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। প্রথমেই বলতে চাই, আমার কথার ভুল বোঝাবুঝির কারণে যে গভীর কষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন । আমি কখনোই ফিলিস্তিন ও গাজার মজলুম মুসলিমের ওপর নিকৃষ্ট ইসরাইলের ঘৃণিত হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করিনি, এখনো করি না, কখনোই করবো না।

যে স্ক্রিনশটগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, তা আমার প্রকৃত মনোভাবকে প্রতিফলিত করে না। এখানে একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, এবং আমার কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। আমি নিঃসন্দেহে গাজা ও তার জনগণের পাশে আছি, তাদের ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার দাবিকে কঠোরভাবে ও গভীরভাবে সমর্থন করি। ফিলিস্তিনের মুসলমানদের হত্যার জন্য আমি ইসরাইলের করুণ ধংস চাই, মনে প্রাণে চাই, আল্লাহর কাছে চাই।

যেহেতু আমার ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথোপকথনটি ছিলো কিছুটা বিকালের দিকের, আমি সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্টিভ না থাকার জন্য আমি বুঝতে পারিনি এটি পুরো বিশ্বের ও বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের একটি কালেক্টিভ প্রটেস্ট। আমি নিতান্তই আমার নিজ ব্যাচ এর সেকশনের কিছু শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত ভেবেছিলাম তাই আমার প্রতিক্রিয়া এরূপ ছিলো। তবে সেটা হলেও আমার এইরূপ প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক হয়নি। এই কারণে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।

আমার শিক্ষার্থী, সহকর্মী, বন্ধু এবং এই ঘটনার দ্বারা যারা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলের চলমান নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ কর্মসূচি পালন করতে সোমবার (৭ এপ্রিল) ক্লাস না করার সিদ্ধান্ত নেন ড্যাফোডিলের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানার পর প্রভাষক তাহমিনা শিক্ষার্থীদের গ্রুপে জানান, ক্লাসে না এলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

স্ক্রিনশটে দেখা যায়, তাহমিনা রহমান লিখেছেন, আগামীকাল যদি কেউ ক্লাস মিস দিয়ে স্ট্রাইকে যেতে চাও, যেতে পারো। আমি তাকে দুইটা অ্যাবসেন্ট দিয়ে দেবো। সবাই না আসলে সবাই অ্যাবসেন্ট। আর এই টপিকে কেউ কাউন্সিলিং চাইতে আসবে না। তোমরা যদি বাজে এক্সকিউজ দেখাও, তাহলে এটি একটি সতর্কবার্তা।

জানতে চাইলে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার রোববার বলেন, এমন একটি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীরা করবে, এটিই স্বাভাবিক বিষয়। সেখানে কর্মসূচিতে অংশ নিলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়া হবে তা হতে পারে না। কাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন