কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্থানীয় একটি মসজিদে এশার নামাজ আদায়রত অবস্থায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মসজিদের সেক্রেটারিসহ চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মসজিদের সেক্রেটারি মো. ইব্রাহীমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে আহত ইসমাইল (৩৫), কামরুল (১৯) ও কাওসার (২৮)কে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেবিদ্বারের ফতেহাবাদ দক্ষিণ পাড়া বায়তুল আক্সা জামে মসজিদে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিরা জানান, গত এক মাস আগে মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে পার্শ্ববর্তী নয়াকান্দি গ্রামের সঙ্গে ফতেহাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামের ছেলেদের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাকে কেন্দ্র শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নয়াকান্দি গ্রামের একজনকে মারধর করা হয়।
এরপর রাত ৮টার দিকে নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেরা ফতেহাবাদ গ্রামের কামরুল নামের একজনকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করে। তখন কামরুলের সঙ্গে থাকা অন্য ছেলেরা নিজেদের রক্ষা করতে দৌড়ে এসে মসজিদের ভেতরে ঢুকে। তখন নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেরা তাদের মসজিদে খুঁজতে এসে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয় এবং এলোপাতাড়ি মারধর করা সহ মসজিদে ভাঙচুর চালায়।
তাদের বাধা দিলে মসজিদের সেক্রেটারি ইব্রাহীমকেসহ চারজনকে তারা পিটিয়ে আহত করে। সংঘর্ষ চলার এক পর্যায়ে ইমাম মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেন যে, মসজিদে ডাকাত পড়েছে। এরপর হামলাকারীরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
মসজিদের ইমাম মাও. আবদুল আউয়াল জানান, ১০/১২ জন ছেলে হঠাৎ মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি মসজিদের গ্লাস, দরজা জানালা ভাঙচুর চালায়। তাদের প্রত্যেকের হাতে রড, হকিস্টিক ও পাইপ ছিল। মসজিদের সেক্রেটারি ইব্রাহীম বাঁধা দিলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
ঘটনায় আহত কামরুলের চাচাত ভাই শাফাতুল ইসলাম রাব্বি বলেন, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে আসার পথে নয়াকান্দি গ্রামের ইমন, মনির, সাকিব, আবু তাহের, মাসুদ, সাইদুল জিহান, তাইদুল ও রাব্বি আমাদের আটকিয়ে মারধর করে।
আমরা ভয়ে দৌড়ে এসে মসজিদে ঢুকি। তারা আমাদের খুঁজতে এসে মসজিদে ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শী, মসজিদের সভাপতি আবুল কাশেম জানান, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ছিলাম। হঠাৎ দেখি একদল ছেলে মসজিদের বাহিরে চারদিকে গ্লাস, দরজা-জানালা ভাঙচুর করছে। এদের কয়েকজন মসজিদের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরে শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে আগের মারামারিকে কেন্দ্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।
দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলামের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মসজিদ ভাঙার উদ্দেশ্যে হামলা হয়নি। ক্রিকেট খেলা নিয়ে পূর্ব থেকে দুই পক্ষের মারামারি ঘটনায় এক পক্ষের ছেলেরা মসজিদ ভাঙচুর করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন