খুলনার কয়রা উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার আমাদী, বাগালী, মহেশ্বরীপুর, মহারাজপুর, কয়রা সদর, উওর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চারপাশের সরিষা খেতগুলো শুধু সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে।
সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেমন প্রকৃতির রূপ বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠও।
কখনও সবুজ, কখনও সোনালি, কখনও-বা হলুদ। এমনই ফসলের মাঠ পরিবর্তনের এ পর্যায়ে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে ঢাকা পড়েছে ফসলের মাঠ। বিকাল হলেই মাঠগুলোতে প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলছেন অনেকে।
সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে। বর্তমানে সরিষা একটি লাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় কয়রায় ধীরে ধীরে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কয়রা উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষা চাষে উপজেলার ২০০ জন কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এই প্যাকেজে প্রত্যেক কৃষক পেয়েছেন ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সার এবং ১ কেজি সরিষার বীজ।
কালনা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমি এ বছরে ৭ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। গত বছরও ৫ বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছিলাম, ফলন বাম্পার হয়েছিল। এ বছরও বাম্পার হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তরুণ কৃষক আশরাজ্জামান লিটন বলেন, আমি কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এ বছর আমি প্রথমবার সরিষা লাগিয়েছি। ফলনও বাম্পার হয়েছে। যদি কোনো দুর্যোগে আঘাত না হানে, তাহলে বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।
বেদকাশী গ্রামের কৃষক মোহর আলী গাইন বলেন, আমি প্রতি বছর সরিষা লাগাই। এ বছরে ২ বিঘা জমিতে সরিষা লাগায়েছি। ভালো ফলন হয়েছে। কম খরচে সরিষা চাষে বাম্পার ফসল পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়রা উপজেলায় সূর্যমুখীর পাশাপাশি সরিষার ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে।
এবার অতিবৃষ্টির কারণে আমন দেরিতে হওয়ায় সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তেরের পরামর্শে কৃষক ভাইয়েরা বিনা চাষে সরিষার আবাদ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন